শুভ্রজ্যোতি ঘোষঃ আসরাফ হাকিমি। মরক্কোর এই প্লেয়ারটি এখন বিশ্ব ফুটবলের আঙিনায় এক বন্দিত নাম হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে বৃহস্পতিবারের পর হাকিমি আরও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন। কারণ কানাডাকে হারানোর ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়েছেন তিনি। ম্যাচের সেরা হয়েছেন হাকিমি। তাঁর অনবদ্য ফুটবলে মরক্কো স্বপ্ন দেখছে কাতার বিশ্বকাপের নক আউট পর্বে একটার পর একটা ম্যাচ জেতার। কানাডাকে হারিয়ে ৩৬ বছর পর বিশ্বকাপ ফুটবলের আঙিনায় প্রি কোয়ার্টারে মরক্কো। প্রি কোয়ার্টারে মরক্কোর প্রতিপক্ষ স্পেন। গ্রুপের শেষ ম্যাচে মরক্কোর জয়ের কাণ্ডারি আসরাফ হাকিমির জীবন খুব একটা মসৃণ ছিল না। বাবা-মা যখন মরক্কোয় থাকতেন তখন তাদের আর্থিক অবস্থা ছিল একেবারে তলানিতে। বাবা ছিলেন সামান্য সবজি বিক্রেতা, মা ছিলেন সাফাই কর্মী। কোনও এক সহৃদয় ব্যক্তির সাহচর্যে হাকিমির বাবা মা চলে আসেন স্পেনে। সেখানে নতুন করে কাজকর্ম শুরু হয়। হাকিমির জন্ম স্পেনেই। কিন্তু তাঁর ভাই রয়ে গিয়েছিলেন মরক্কোতে।
রিয়াল মাদ্রিদের অ্যাকাডেমিতে কষ্ট করে ভর্তি হওয়া। সেখান থেকেই নিজের ফুটবল কেরিয়ারের উত্তরণ। এরপর ধীরে ধীরে ইউরোপিয়ান ফুটবলে নিজের জাত চেনাতে থাকেন হাকিমি। কিন্তু নিজের মাতৃভূমি মরক্কোকে ভুলে যাননি হাকিমি। বর্তমানে তিনি পিএসজিতে লিও মেসির সতীর্থ। কিন্তু মরক্কো তাঁর নস্টালজিয়া। তাই স্পেনে জন্ম হলেও নিজের মাতৃভূমিকে ভোলেননি হাকিমি। সুযোগ ছিল স্পেনের জাতীয় দলের হয়ে খেলার। কিন্তু সেই সুযোগ তিনি হেলায় সরিয়ে দিয়ে নিজের বিশ্বকাপের আঙিনায় নিজের দেশ মরক্কোকেই প্রাধান্য দিয়েছেন। ফুটবলকে আঁকড়ে থেকে বাবা মাকে নতুন করে স্বপ্ন দেখিয়েছেন।
হাকিমি স্বপ্ন দেখেছিলেন মরক্কোকে বিশ্বকাপের আঙিনায় নতুন করে প্রতিষ্ঠা করা। সেটাই তিনি করে যাচ্ছেন। গ্রুপ পর্বে মরক্কোর খেলা সকলের প্রশংসা কুড়িয়েছে। বিশেষ করে আসরাফ হাকিমির খেলা তো আরও বেশি করে প্রশংসিত হচ্ছে। সেই হাকিমির হাত ধরে মরক্কো স্বপ্ন দেখছে বিশ্বকাপে নতুন উত্তরণের।