কৌশিক সালুই বীরভূম:- পড়াশোনা করে উচ্চশিক্ষিত হয়ে স্বনির্ভর হতে চেয়েছিল তারা। কিন্তু পরিবারের এক সিদ্ধান্ত তাদের সেই স্বপ্নভঙ্গ হতে বসেছিল। প্রতিবাদী ও সাহসী হয়ে পরিবারের বিরুদ্ধে গিয়ে রুখে দাঁড়িয়েছিল তারা। প্রশাসনের কাছে হাজির হয়ে জানিয়েছিল “আমরা এই ছাত্র অবস্থায় বিয়ে করতে চাই না আমরা একটু লেখাপড়া করতে চাই”। বাপ মাকে বলে তার ব্যবস্থা করে দিন। এভাবেই বীরভূমের ৬ জন কন্যাশ্রী তাদের নিজেদের বিয়ে নিজেরাই বন্ধ করেছিল। তাদের ইচ্ছাকে মান্যতা দিয়েছে প্রশাসন। সকলের বিয়ে বন্ধ করে দিয়ে পড়াশোনার ব্যবস্থাও হয়েছে।
স্বীকৃতি হিসেবে জেলা ও রাজ্য স্তরে পুরস্কৃত হয়েছে তারা। বুধবার বীরভূমের সিউড়িতে শিশু দিবস ও আন্তর্জাতিক শিশু অধিকার সপ্তাহ উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। উপস্থিত ছিলেন জেলাশাসক বিধান রায়, সিউড়ির বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী, পশ্চিমবঙ্গ শিশু শিক্ষা আয়োগ এর উপদেষ্টা অনন্যা চক্রবর্তী সহ অন্যান্য বিশিষ্টজনেরা। ব্রম্ভখন্ড বাসাপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের বর্তমানে একাদশ শ্রেণির ছাত্রী রোকেয়া খাতুন, সাহাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্রী মালা খাতুন, চুনপলাশী উচ্চ বিদ্যালয় এর দশম শ্রেণীর ছাত্রী রাফিয়া খাতুন, মহম্মদ বাজার সুধাকৃষ্ণ উচ্চ বিদ্যালয় এর নবম শ্রেণীর ছাত্রী রেনুকা খাতুন এবং কোটাসুর উচ্চবিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী উর্মিলা বায়েন।
এরা সকলেই পড়াশোনা করতে চেয়ে পরিবারের বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়ে ছিল। সকলেই এদিন তাদের সাহসিকতার পুরস্কার পেলেন জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে। এছাড়াও বীরভূমের আর এক কন্যাশ্রী মানসী দাস আগামী কুড়ি নভেম্বর কলকাতায় সাহসিকতার পুরস্কার পাবেন। ওই কন্যাশ্রী পড়াশোনা করতে চেয়ে, নিজের বিয়ে বন্ধ করেছিল। রোকেয়া খাতুন, উর্মিলা বায়েন রা বলেন,”পড়াশোনা বন্ধ করে দিয়ে পরিবার বিয়ে দিতে চেয়েছিল। প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়ে নিজে বিয়ে বন্ধ করেছি। বর্তমানে পড়াশোনা করছি এবং ভবিষ্যতে নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে স্বনির্ভর হতে চাই”।