পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক: কলকাতা থেকে বাংলা, বিহার ওড়িশার এক সময়ের রাজধানী মুর্শিদাবাদ ভ্রমণের জন্য চালু হয় হাজারদুয়ারি এক্সপ্রেস ট্রেন। আর হাজারদুয়ারি এক্সপ্রেস ট্রেন এখন বিজ্ঞাপনে মুখ ঢেকেছে। এই ঘটনায় কলকাতা থেকে শুরু করে জেলাজুড়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে ইতিহাস সচেতন নাগরিকদের মধ্যে। এই ব্যাপারে পূর্ব রেলের জনসংযোগ আধিকারিক একলব্য চক্রবর্তী বলেন, রেলের আয় বাড়াতেই এই উদ্যোগ। করোনার সময় থেকে রেলের আয় অনেকটা কমেছে। করোনার সময় এক ধাক্কায় যাত্রীর সংখ্যা অনেক কমে গেছে। তাই রেল কর্তৃপক্ষ বিজ্ঞাপন দিয়ে আয় বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে বাইরে বিজ্ঞাপন দিলেও ট্রেনের কামরার ভিতর জেলার দর্শনীয় স্থানের ছবি দিয়েসাজিয়ে তোলা হবে।
মূলত পর্যটকদের সুবিধার কথা মাথায় রেখে এবং জেলার মানুষের দাবি মেনে ২০০৯ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন অর্থ ও বিদেশ মন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায় ওই ট্রেনটির শুভ সূচনা করেন। ঐতিহাসিক হাজারদুয়ারি নামে একটি এক্সপ্রেস ট্রেন পেয়ে জেলার মানুষ গর্বিত হন। ঐতিহাসিক ওই ট্রেন জুড়ে এখন বস্ত্র প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন। আর তাতেই জেলার ইতিহাস সচেতন মানুষদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
এই ব্যাপারে বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ইন্দ্রজিৎ ধর বলেন, ‘এমন বিজ্ঞাপন বন্ধ হওয়া উচিত। সমগ্রদেশে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পর্যটনকেন্দ্র হাজারদুয়ারি। সুতরাং ওই ট্রেনে পর্যটকদের উৎসাহিত করতে মুর্শিদাবাদ ঐতিহাসিক স্থানগুলির ছবি ও ঐতিহ্যের বর্ণনা দেওয়া যেতে পারে। এর ফলে জেলার ঐতিহ্য অনেকটাই ক্ষুণ্ণ হবে।
সপ্তাহখানেক থেকে বিজ্ঞাপন সাঁটা হাজারদুয়ারি এক্সপ্রেস ট্রেনটি চলাচল করতে দেখে সাধারণ মানুষ রেলের এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে সোশ্যাল মিডিয়াতেও ক্ষোভ দেখাতে শুরু করেছে। এই বিষয়ে মুর্শিদাবাদ জেলা রেলওয়ে প্যাসঞ্জার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক আমিনূর রহমান বলেন, ‘ব্যাপারটা আমাদের নজরে এসেছে।
ঐতিহাসিক স্থানের নামাঙ্কিত একটি ট্রেনকে বিজ্ঞাপনে ঢেকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত ঠিক নয়। আমরা এই বিষয়ে দ্রুত রেল কর্তার দৃষ্টি আকর্ষণ করব।’ প্রশ্ন উঠেছে রেল বোর্ড যখন ঐতিহাসিক স্থানের স্টেশনগুলিকে মডেল স্টেশনের তকমা দিয়ে ঢেলে সাজাতে শুরু করেছে তখন হাজারদুয়ারি ট্রেনের ক্ষেত্রে এমন দৃষ্টান্ত কেন।