পুবের কলম, ওয়েব ডেস্ক: একটি অনুষ্ঠানে অল ইন্ডিয়া মজলিশ-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (এআইএমআইএম) সুপ্রিমো আসাদউদ্দিন ওয়াইসি সেক্যুলার দলগুলির মুসলিমদের গুরুত্ব না দেওয়া প্রসঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেছেন। কোনো দলের নাম না করে তিনি বলেছেন, দেশে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সেক্যুলার দল আছে, যারা নিজেদের দলের মুসলিম সদস্যদের পাশে নিয়ে ছবি তুলতে দ্বিধা বোধ করেন। ওয়াইসির মতে বিগত দু’বছরে গুরুত্বপূর্ণ সেক্যুলার দলগুলির হাই প্রোফাইল নেতাদের কখনও কোনো জনসভায় মুসলিম প্রতিনিধিদের পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তুলতেও দেখা যায়নি। তাদেরকে একমাত্র তাদের বাসভবনে অথবা ইফতারের জন্য আমন্ত্রণ করলে মুসলিম প্রতিনিধিদের পাশে নিয়ে ছবি তুলতে দেখা যায়। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেছেন, সেক্যুলার দলের নেতারা ভয় পাচ্ছেন এটা ভেবে যে, মুসলিমদের পাশে নিয়ে ছবি তুললে তারা সংখ্যাগুরুদের ভোট পাবেন না। ভোটে হেরে যাওয়ার ভয়ে নিজেদের দলের সহযোদ্ধাদের এড়িয়ে যাচ্ছে সেক্যুলার দলের নেতারা।
তিনি বলেন, অন্য দলের মুসলিম নেতারা আমাকে অভিযোগ করেছিল যে, তাদের দলের নেতারা তাদেরকে পাশে দাঁড় করিয়ে ছবিও তোলেন না। এই প্রশ্নের উত্তরে ওয়াইসি তাদেরকে বলেছিলেন, ‘তোমাদেরকে কারো পাশে দাঁড়ানোর প্রয়োজন নেই। কারণ তোমরা রসুল (সা.)-র উম্মত। তায়েফের সফরে নিজের রক্তে স্নান করেছেন রসুল (সা.)। তাঁর গোটা জীবন কেটেছে প্রতিকূলতার সঙ্গে লড়াই করে। তাই তাঁর উম্মতদের ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই।’ ওয়াইসি আরও বলেন, মুসলিমদের কোণঠাসা করার চেষ্টা করলে তাদের উদ্যম ও সাহস কমে না বরং বাড়ে। যারা মুসলিম প্রতিনিধিদের কোণঠাসা হওয়া প্রসঙ্গে প্রশ্ন করেছিলেন, তাদেরকে ওয়াইসি বলেন, ‘যদি কোনো সেক্যুলার দল তোমাদের পাশে না দাঁড়াতে চায়, তাহলে তোমরা কেন তাদের পাশে দাঁড়াবে?’ ওই অনুষ্ঠান মঞ্চে কোরআনের আয়াত উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, ‘হাসবুনাল্লাহু ওয়া নি’মাল ওয়াকিল’ অথাৎ আল্লাহ্ই আমাদের জন্য যথেষ্ট। তিনি বলেন, আল্লাহ আসমান যমিনের সৃষ্টিকর্তা। তিনি আমাদের সকলকে সৃষ্টি করেছেন। একদিন আমাদের মৃত্যু হবে। আবার কায়ামতের পর নতুন করে জীবিত করবেন। ওয়াইসি বলেন, আমাদের পাশে কেউ না থাকলেও রসুল (সা.) আছেন। তাঁর মতে, রসুল (সা.)-র উম্মত যদি বলে আমাদের সঙ্গে কেউ নেই, তবে তা দূর্ভাগ্যজনক।
উল্লেখ্য, কেন্দ্রে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর থেকে অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতাদেরকে গেরুয়া বসন পরতে হয়েছে সংখ্যাগুরু ভোটারদের মুখ চেয়ে। শুধু তাই নয়, কেজরিওয়াল-রাহুল গান্ধীর মত নেতাদেরকে হিন্দু বিরোধী বলেও প্রচার করার চেষ্টা করা হয়েছে। বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মুসলিম তোষণের অভিযোগও এনেছে বিজেপি।
ওয়েইসির মতে এমন একটা পরিস্থিতিতে কিছুটা বাধ্য হয়েই সেক্যুলার রাজনৈতিক দলগুলিকে মুসলিম সমর্থকদের কাছ থেকে দূরত্ব বজায় রাখতে হয়েছে ভোটব্যাঙ্ক ধরে রাখার জন্য।