নিজস্ব প্রতিবেদক: দীপাবলীর দিনেই রাজ্যে আছড়ে পড়তে পারে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং। আর বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড়ের ছোবল কীভাবে মোকাবিলা করা হবে, তার কৌশল ঠিক করতে আজ শুক্রবার দুপুরে বিভিন্ন দফতরের পদস্থ আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী।
ইতিমধ্যেই কলকাতা সহ উপকূলবর্তী এলাকার জেলাগুলিতে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর ১২টি দলকে মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি বৃহস্পতিবারই সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দফতরের কর্মীদের ছুটি বাতিল করেছে রাজ্য সরকার। এই মুহূর্তে যাঁরা ছুটিতে রয়েছেন, তাঁদের ২২ অক্টোবরের মধ্যেই কাজে যোগ দেওয়ার জন্য নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে।
আলোর উৎসবে মেতে উঠতে যখন প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন রাজ্যের সাধারণ মানুষ তখনই চোখ রাঙাতে শুরু করেছে বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং।
বৃহস্পতিবার আলিপুর আবহাওয়া দফতরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এদিন সকালেই উত্তর আন্দামান সাগর ও সংলগ্ন দক্ষিণ আন্দামান সাগর ও দক্ষিণ পূর্ব বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ তৈরি হয়েছে। বিকেল থেকেই নিম্নচাপটি ক্রমশ পশ্চিম ও দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে সরতে শুরু করবে।
শনিবার নিম্নচাপে পরিণত হয়ে রবিবার শক্তি বাড়িয়ে গভীর নিম্নচাপে তৈরি হবে। উত্তরবঙ্গ সফর সেরে বৃহস্পতিবার বিকেলেই উত্তরবঙ্গ সফর থেকে ফিরে এসেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানবাজারে কালীপুজোর উদ্বোধনেও ‘সিত্রাং’ নিয়ে তাঁর গলায় উদ্বেগ ফুটে উঠেছিল। সাধারণ মানুষকে সাবধানে থাকার অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘পুজোর সময়েও বৃষ্টি হবে বলে জানিয়েছিল আবহাওয়া দফতর। যদিও পুজোয় তেমন বৃষ্টি হয়নি। তবে এবার আলিপুর আবহাওয়া দফতরের পক্ষ থেকে বার বার ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস দেওয়া হচ্ছে। দিল্লির মৌসম ববনও আজ সকালে বিশেষ সতর্ক বার্তা পাঠিয়েছে। উপকূলবর্তী এলাকা থেকে লোক সরাতে বলেছে। সব কর্মীদের ছুটি বাতিল। আগামিকাল শুক্রবার অফিসারদের নিয়ে বৈঠক রয়েছে।’
সিত্রাং যাতে জনজীবনকে সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত করতে না পারে তার জন্য কোমর কষে ঝাঁপাচ্ছে রাজ্য প্রশাসন। ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় এবং উপকূলবর্তী এলাকা থেকে বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু হচ্ছে।
মোট ১২টি এনডিআরএফ দলকে নামানো হচ্ছে। তার মধ্যে উত্তর ২৪ পরগনায় দুটি, দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও পূর্ব মেদিনীপুরে তিনটি করে, পশ্চিম মেদিনীপুর, হাওড়া, হুগলি এবং কলকাতায় একটি করে দল মোতায়েন করা হচ্ছে। উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে মাইকিং করে স্থানীয় বাসিন্দাদের সতর্ক করে দেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।