পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: মেট্রোর কাজের জন্য ফের ফাটল আতঙ্ক ফিরে এল বৌবাজারে। সাময়িক বন্ধ রাখা হয়েছে মেট্রোর কাজ। শুক্রবার ভোররাতে দুর্গা পিতুরি লেনের পাশের গলি মদন লেন ও বিবি গাঙ্গুলি স্ট্রিটের বেশ কয়েকটি বাড়িতে ফাটল দেখা গেছে। এখনও পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী ১৪০ জন মানুষকে সরিয়ে আপাতত হোটেলে রাখা হয়েছে। খালি করে দেওয়া হচ্ছে এলাকা। ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িগুলির পাশে ব্যারিকেড করে দেওয়া হয়েছে।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত রয়েছেন স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর বিশ্বরূপ দে। ভোর সাড়ে পাঁচটা থেকে ঘটনাস্থলে রয়েছেন বিশ্বরূপবাবু। গোটা ঘটনায় তিনি মেট্রো কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেন, ‘মানুষের সঙ্গে গিনিপিগের মতো আচরণ করছে মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ। এই অসহায় মানুষগুলির দায়িত্ব কারা নেবে? বউবাজার স্ট্রিট ধ্বংসের দিকে যাচ্ছে শুধুমাত্র মেট্রো কর্তৃপক্ষের জন্য। আমরা মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত বক্তব্য দাবি করছি।’
সূত্রের খবর, এখনও ১০টি বাড়ি খালি করে দেওয়া হয়েছে। কলকাতা মেট্রো রেলওয়ে কর্পোরেশন লিমিটেড (কেএমআরসিএল) এক অফিসিয়াল বিবৃতি পেশ করে ভুক্তভোগী মানুষকে সরিয়ে স্থানীয় হোটেলে রাখার নির্দেশ দিয়েছে।
ভোর সাড়ে চারটে থেকেই খোলা ছাদের তলায় বহু মানুষ। সকলের চোখে মুখেই আতঙ্কের ছাপ স্পষ্ট। কোথায় যাবেন, কি করবেন কিছুই বুঝতে পারছেন না তারা। মাথার ছাদ হারিয়ে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে রাস্তার ধারে বসে স্থানীয় মানুষ। সকলের চোখে মুখেই আতঙ্কের সঙ্গে রাগ থেকে বিরক্তির ভাব স্পষ্ট।
বার বার একই ঘটনায় মেট্রো রেল কর্তৃপক্কের দিকে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তারা। অভিযোগ, ফাটলের কথা জানানোর পরেও মেট্রো রেলের প্রতিনিধিরা আসেননি। পরে মেট্রো রেলের তরফে তিনজন প্রতিনিধি পাঠানো হলেও বাসিন্দারা তাঁদের ওই এলাকায় ঢুকতে বাধা দেন। পরে মেট্রো রেলের আধিকারিক ও ইঞ্জিনিয়াররা এলাকা পরিদর্শন করেন। পুলিশ দ্রুত এলাকা খালি করার নির্দেশ দিয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো কাজ শুরু হওয়ার পর বউবাজারে একইভাবে ফাটল দেখা দেয়। একের পর এক বাড়িতে ফাটল দেখা দিয়েছিল। এমনকী ওই বছর বহু বাড়ি ধসে পড়ে। প্রায় ৬০০ বাসিন্দাকে সরানো হয়। মে মাসেও দুর্গা পিতুরি লেনের পাশের গলি মদন লেন ও বিবি গাঙ্গুলি স্ট্রিটের একাধিক বাড়িতে ফাটল দেখা দেয়। স্থানীয় মানুষকে সেই সময় সাময়িকভাবে বিভিন্ন হোটেলে রাখা হয়।