পুবের কলম, ওয়েবডেস্কঃ বয়স মাত্র ২ বছর ৩ মাস। আর এই বয়সেই ওজন ৪৫ কেজি! একরত্তির মেয়ে এত ওজন দেখে তাজ্জব চিকিৎসকেরা। বিছানায় শুয়ে থাকা ছাড়ার এই একরত্তির কোনও গতি নেই। এই শরীর নিয়ে হুইল চেয়ারে বসে দিল্লির ম্যাক্স সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে আসেন বাবা-মায়ের সঙ্গে। শিশুটির নাম খ্যাতি বর্ষনি। শিশুটিকে পরীক্ষা করে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, মেদ ঝড়াতে তার অস্ত্রোপচার করতে হবে। ভারতে এই প্রথম এত কম বয়সী কোনও শিশুর মেদ ঝড়ানোর জন্য অস্ত্রোপচার করা হল।
খ্যাতির যখন মাত্র তিন বছর বয়স তখন থেকেই তার বাবা-মা তাদের মেয়ের চেহারার এই অস্বাভাবিক লক্ষণ লক্ষ্য করেন।
হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানানা, শিশুটির জীবন বাঁচাতে ব্যাট্রিয়াটিক সার্জারি করা হয়। তবে খ্যাতি সস্থ আছে। চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে থাকতে হবে।
ম্যাক্স হাসপাতালের চিকিৎসক মনপ্রীত শেঠি জানান, জন্মের সময় শিশুটি পুরোপুরি স্বাভাবিক ছিল। ওজন ছিল আড়াই কেজি। এর পর থেকে ওজন অস্বাভাবিকভাবে বাড়তে শুরু করে। ছয় মাস বয়সে শিশুটির ওজন দাঁড়ায় ১৪ কেজিতে। দুই বছর বয়সে তা আরও বেড়ে হয় ৪৫ কেজি। শিশুটির আট বছর বয়সী এক ভাই আছে। বয়স বিবেচনায় ওই শিশুর ওজন স্বাভাবিক। তার অস্ত্রোপচারের কয়েক দিন আগে তার চিকিৎসকেরা খ্যাতির ঘুমের উপর একটি পরীক্ষা চালান। সেখানে তার ঘুমের মধ্যে তার অক্সিজেন ৭৫ শতাংশের মধ্যে নেমে এসেছে। সেখানে সাধারণ মানুষের ৯৫ থেকে ১০০ শতাংশের মধ্যে অক্সিজেন ওঠানামা করে।
চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, স্লিপ অ্যাপনিয়া আছে। স্লিপ অ্যাপনিয়া এমন একটি ঘুমের অসুখ যাতে ব্যক্তির ঘুমানোর সময় শ্বাস নেওয়া ক্রমাগত বন্ধ হয়ে যায় ও পুনরায় শুরু হয়।
বিবৃতিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মেদ ঝরানোর অস্ত্রোপচারে সাধারণত রোগী হিসেবে শিশুদের দেখা যায় না। তাই এই শিশুর অস্ত্রোপচারের জন্য বিভিন্ন বিভাগের চিকিৎসকদের নিয়ে একটি দল গঠন করা হয়েছিল। তাঁরা শিশুটির পাকস্থলীর একটি অংশ বাদ দিয়েছেন। এর ফলে শিশুটির খাওয়ার পরিমাণ কমবে। অস্ত্রোপচারের পর শিশুটিকে বিশেষ ডায়েট মেনে চলতে হবে।
শিশুটির বাবা বলেন, ‘গত দুই বছরে আমাদের অনেক লড়াই করতে হয়েছে। আমরা এই লড়াইয়ে অর্ধেক জয়ী হয়েছি। আর অনেকটা পথ বাকি আছে। খ্যাতি স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসুক, সেটাই কাম্য।’