পুবের কলম প্রতিবেদক: সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মেলবন্ধনে একত্রীভূত হওয়ার ঘটনা এরাজ্যের মানুষ বহুবার দেখেছে। কিছু মানুষ উসকানি দেওয়ার পিছনে লেগে থাকলেও বাঙালির সম্প্রীতির দৃঢ়তাকে বিনষ্ট করতে পারেনি। আরও একবার সম্প্রীতির এক সুন্দর ও উপভোগ্য দৃশ্যের সাক্ষী থাকল উত্তর কলকাতা। উত্তর কলকাতার আশেপাশের প্রায় ৩০০ মুসলিম স্থানীয় দুর্গাপূজা প্যান্ডেলের বাইরে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করেছেন। তাঁরা পুলিশকে ভিড় ও যানজট সামলানোর কাজে সহায়তা করেছেন।
বেলগাছিয়া আমান কমিটির সদস্যরা এই কাজে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেন। সংগঠনটির পক্ষ থেকে এই কাজের জন্য বেলগাছিয়া ট্রাম ডিপো ক্রসিংয়ে একটি শিবির হয়। সেই শিবির থেকে মাইকিং করে পুজো দেখতে আসা মানুষজন এবং পুজোর দায়িত্বে থাকা কর্মীদের বিভিন্ন নির্দেশনা দেন। পাশাপাশি এই কমিটির সদস্যরা দর্শনার্থীদের যে কোনও সাহায্যের জন্য এগিয়ে এসেছিল। সংগঠনটি সদস্যরা পূজো উদ্যোক্তাদের সঙ্গে কথা বলেন এবং যাতে কোথাও কোনোরকম সমস্যার সৃষ্টি না হয় সে ব্যাপারে সদর্থক ভূমিকা পালন করেন।
বেলগাছিয়া আমান কমিটির সাধারণ সম্পাদক শওকত আলী বলেন, ১৯৮৫ সালে এই কমিটি গঠন করা হয়েছিল। শান্তি এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখা এবং বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক কাজ করার উদ্দেশ্যে নিয়ে এই কমিটি কাজ শুরু করেছিল। তিনি আরও বলেন, একটি ছোট অপ্রীতিকর ঘটনা এলাকার সাম্প্রদায়িক মেলবন্ধনে ক্ষতিকর ছাপ ফেলতে পারে।
সম্প্রীতিকে বিনষ্ট করতে পারে। তাই সেরকম কোনো ঘটনা যাতে না ঘটে সে বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়ে আমরা কাজ করছি। তিনি জানান, যে সময় এই কমিটির প্রতিষ্ঠা হয়েছিল সেসময় আমাদের এলাকার সাম্প্রদায়িক স্থিতিবস্থা ভাল ছিল না।
সেরকম একটা দুঃসময়ে সাম্প্রদায়িক মেলবন্ধন তৈরিতে মাঠে থেকে কাজ করেছে বেলগাছিয়া আমান কমিটির দায়িত্বশীল এবং সদস্যরা। আমরা গত বেশ কয়েক বছর ধরে দুর্গাপূজার সময় এভাবে ক্যাম্প স্থাপন করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ভিত শক্ত করতে এবং মানবকল্যানে সেবামূলক কাজ করছি। সংগঠনটি রক্তদান শিবির, দুস্থদের খাদ্য, বস্ত্র বিতরণ-সহ বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক কাজ করে থাকে।
অন্যদিকে কমিটির সহকারী সম্পাদক হাজি ওয়াসিম খান বলেন, সদস্যদের মধ্যে সিংহভাগই মুসলিম। পুলিশও আমাদের কমিটিকে সমর্থন করে এবং সাহায্য চায়। উল্টাডাঙ্গা থানার এক আধিকারিক জানান, পুজোর দিনগুলিতে পুলিশের পাশাপাশি আমান কমিটির স্বেচ্ছাসেবকরা দুর্দান্ত কাজ করেছে।