নিজস্ব প্রতিনিধি: ফের বঙ্গের বিজেপি, সিপিএম ও কংগ্রেস নেতাদের গালে বিরাশি সিক্কার থাপ্পড়! বাংলায় তৃণমূল সরকারের আমলে উন্নয়ন হচ্ছে না বলে প্রায়শই চিৎকার করেন তাঁরা। কার্যত রাজ্যকে ছোট করতেই যে তাঁদের সেই অভিযোগ, ফের একবার প্রমাণিত হল। এবার স্বনির্ভর গোষ্ঠী তৈরির ক্ষেত্রে দেশের বাকি রাজ্যগুলিকে টেক্কা দিয়ে শীর্ষস্থান দখল করল বাংলা। বিশ্বকর্মা পুজোর আগের দিন শুক্রবার সন্ধ্যায় টুইট করে সেই সুখবরই জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই সাফল্যের জন্য রাজ্যে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সঙ্গে জড়িতদের শুভেচ্ছাও জানিয়েছেন।
রাজ্যে ক্ষমতার পালাবদলের পরেই নারী শক্তির ক্ষমতায়নের দিকে বিশেষ নজর দিয়ে স্বনির্ভর গোষ্ঠী গড়ার উপরে জোর দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিভিন্ন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর তৈরি পণ্য যাতে ক্রেতাদের হাতে পৌঁছয় তার জন্য বিশেষ উদ্যোগও নিয়েছিলেন। রাজ্য সরকারের সহযোগিতায় বাংলার গণ্ডি ছাড়িয়ে দেশের বিভিন্ন রাজ্য ও বিদেশে পাড়ি দিচ্ছে সেই পণ্য। শহর থেকে শহরতলী এবং গ্রামীণ বাংলায় ক্রমশই বাড়ছে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সংখ্যা। গত বছরই স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে ঋণ জোগানোর ক্ষেত্রে দেশের মধ্যে সেরা রাজ্যের তকমা ছিনিয়ে এনেছিল বাংলা। কেন্দ্রীয় সরকারের সংস্থা নাবার্ডের রিপোর্টেই সেই স্বীকৃতি মিলেছিল। সমবায় ক্ষেত্রে ৯৭ হাজার ৫৩৫টি স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে ঋণ জুগিয়েছিল রাজ্য সরকার। যার ফলে প্রচুর কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হয়েছিল।
গত কয়েক বছর ধরেই পর্যটন, ১০০ দিনের কাজ, উৎকর্ষ বাংলা সহ বিভিন্ন সামাজিক প্রকল্পে মোদি সরকারের পুরস্কার জিতে চলেছে বাংলা। মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্প কন্যাশ্রী তো জাতিসঙ্ঘের স্বীকৃতি আদায় করে নিয়েছে। সম্প্রতি পর্যটনের ক্ষেত্রেও আন্তর্জাতিক পুরস্কার এসেছে রাজ্যের ঝুলিতে। সেই সাফল্যের মাঝেই নতুন পুরস্কার নিয়ে এল স্বনির্ভর গোষ্ঠী। এদিন সন্ধ্যায় টুইটে মুখ্যমন্ত্রী পুরস্কার জেতার কথা ঘোষণা করে লিখেছেন, ‘ন্যাশনাল রুর্যাল লাইভহুড মিশন’ প্রকল্পে ভারতের অন্যান্য রাজ্যকে পিছনে ফেলে সেরার স্থান দখল করেছে পশ্চিমবঙ্গ। রাজ্যে ১০ লক্ষ ৪ হাজার স্বনির্ভর গোষ্ঠী রয়েছে। যাদের জন্য এই সম্মান তাঁদের প্রত্যেককে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।’
সামাজিক কাজের ক্ষেত্রে এবং পিছিয়ে পড়া মানুষদের অর্থনৈতিক হাল ফেরানোর জন্য মোদি সরকারের কাছ থেকে একাধিক পুরস্কার পেলেও রাজ্যকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হতে হচ্ছে বলে অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রীর। একশো দিনের কাজ, বাংলা আবাস যোজনা সহ একাধিক প্রকল্পের প্রাপ্য টাকা আটকে রেখেছে কেন্দ্র। আর মোদি সরকারের ওই আচরণের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরেই সরব রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। আর্থিক প্রতিকুলতা ও কেন্দ্রের অসহযোগিতা সত্বেও রাজ্য যেভাবে বিভিন্ন সামাজিক প্রকল্পকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে তা কুর্নিশযোগ্য বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।