পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক : মাত্র ৬৬ বছর বয়সে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হলেন আইসিসির এলিট প্যানেলভুক্ত প্রাক্তন পাকিস্তানি আম্পায়ার আসাদ রউফ।তিনি লাহোরে নিজের বাসভবনেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার মৃত্যুতে শোকের ছায়া আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের আকাশে।তার অকাল প্রয়াণে শোকপ্রকাশ করেছেন নামিদামী ক্রিকেট ব্যাক্তিত্বরা।
১৩ বছরের আম্পায়ারিং কেরিয়ারে আসাদ রউফ ২৩১টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ পরিচালনা করেছেন। পাকিস্তানের আরও এক আম্পায়ার আলিম দারের সঙ্গে আইসিসি আম্পায়ার হিসেবে বেশ পরিচিতি লাভ করেছিলেন রউফ। ১৯৯৮ সালে আম্পায়ার হিসেবে প্রথম শ্রেণির ম্যাচে প্রথমবার আম্পায়ার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। এর দুই বছর পর ২০০০ সালে আম্পায়ার হিসেবে ক্রিকেটের মাঠে অভিষেক হয়। ২০০৬ সালে আইসিসির এলিট প্যানেলে সুযোগ পান রউফ। পরের সাত বছরে তিনি আম্পায়ার হিসেবে দারুণ সুনাম কুড়ান।
২০০৪ সালে প্রথম কোনো ওয়ানডে ম্যাচে রউফ আম্পায়ারের দায়িত্ব পালন করেন। পরের বছর টেস্টেও তিনি সুযোগ পান। ৬৪টি টেস্টে তিনি আম্পায়ারের দায়িত্ব পালন করেছেন। ৪৯টিতে তিনি মাঠে এবং বাকি ১৫ টেস্টে তিনি টিভি আম্পায়ারের ভুমিকায় ছিলেন। পাশাপাশি ১৩৯ ওয়ানডে ও ২৮ টি-২০ ম্যাচেও দক্ষতার সঙ্গে তিনি আম্পায়ারিং করেন। নিরপেক্ষ আম্পায়ার হিসেবে তিনি পাকিস্তানের সবচেয়ে বিশিষ্ট আম্পায়ারদের মধ্যে একজন হয়ে উঠেছিলেন। আলিম দারের পাশাপাশি রউফ পাক আম্পায়ারিংয়ের অন্যতম ‘মুখ’ হয়ে উঠেছিলেন আসাদ রউফ।
যদিও ২০১৩ সালে একটা ঘটনায় হঠাৎ করে তার কেরিয়ার শেষ হয়ে যায়। আইপিএল স্পট-ফিক্সিং কেলেঙ্কারির তদন্তে মুম্বই পুলিশ তাকে ওয়ান্টেড আসামি হিসেবে চিহ্নিত করে। যদিও সেবার আইপিএলে আম্পায়ারিং করা রউফ টুর্নামেন্ট শেষের আগেই পাকিস্তানে ফিরে যান। পরে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আম্পায়ারদের তালিকা থেকে তার নাম কেটে দেয় আইসিসি। একইসঙ্গে এলিট প্যানেল থেকেও তিনি বাদ পড়েন। পরে অবশ্য আইসিসি জানায়, তদন্তে রউফের নাম আসার জন্য তাকে বাদ দেওয়া হয়নি।
আসাদ অবশ্য পরবর্তীতে জানিয়েছিলেন, আকসুর তদন্তেও তিনি সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।স্টট ফিক্সিংয়ের সব তদন্তের মুখে পড়তে তিনি রাজি। ২০১৬ সালে বিসিসিআই তাকে দুর্নীতি ও অসদাচরণের চারটি অভিযোগের দায়ে ৫ বছরের নিষেধাজ্ঞা দেয়। আম্পায়ারিং শুরুর আগে মিডল-অর্ডার ব্যাটার হিসেবে পাকিস্তানে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলেছিলেন আসাদ।। ন্যাশনাল ব্যাংক এবং রেলওয়ে দলের হয়ে ৭১টি প্রথম-শ্রেণির ম্যাচে তার গড় ২৮.৭৬।
শেষদিকে, নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়ে আর্থিক সংঙ্কটে ভুগতে থাকা আইসিসির হাই প্রোফাইলের আম্পায়ারটি শেষ পর্যন্ত পরিবারের পেট চালাতে লাহোরের বাজারে একটি স্পোর্টস কিটস ও জামা-কাপড়ের দোকান চালাতেন। তার মধ্যেই হঠাৎ করে সব পর্ব শেষ করে মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়লেন পাক ক্রিকেটের আর এক নক্ষত্র আসাদ।