পুবের কলম ওয়েব ডেস্কঃ বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ভুলে না যেতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে রাষ্ট্রসংঘের শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর)। সংস্থাটি বলেছে, রোহিঙ্গাদের সহায়তা তহবিলে ‘অনেক ঘাটতি’ রয়েছে। এসব শরণার্থী ও বাংলাদেশে ক্ষতিগ্রস্ত সম্প্রদায়ের সহায়তায় এ বছর যে তহবিল সংগ্রহের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল, তার অর্ধেকও জোগাড় হয়নি বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলীয় শরণার্থী শিবিরগুলোতে গাদাগাদি করে বসবাস করছে ১০ লক্ষেরও বেশি রোহিঙ্গা। বিশ্বের বৃহত্তম শরণার্থী বসতি এটি। নাগরিকত্বসহ নানা অধিকার থেকে বঞ্চিত এসব রোহিঙ্গা কবে মায়ানমারে ফিরতে পারবে, তা অনিশ্চিত।
মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে ইউএনএইচসিআর বলে, বাংলাদেশে প্রায় ১০ লক্ষ রোহিঙ্গা শরণার্থী অত্যন্ত কষ্টে রয়েছে এবং তারা বেঁচে থাকার জন্য পুরোপুরি মানবিক সহায়তার ওপর নির্ভরশীল। রোহিঙ্গারা সঠিক পুষ্টি, আশ্রয়, স্যানিটেশন সুবিধা এবং জীবিকার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
রাষ্ট্রসংঘের সংস্থাটি জানায়, রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং ক্ষতিগ্রস্ত স্থানীয় সম্প্রদায়ের ১৪ লক্ষেরও বেশি মানুষের সহায়তায় এবছর ৮৮ কোটি ১০ লক্ষ মার্কিন ডলার চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু এখনও পর্যন্ত ৪২ কোটি ৬২ লক্ষ ডলার, অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রার মাত্র ৪৯ শতাংশ জোগাড় হয়েছে।
ইউএনএইচসিআর বলেছে, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জীবন রক্ষাকারী সহায়তা প্রদানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতা গুরুত্বপূর্ণ ছিল এবং আছে। কিন্তু প্রয়োজনের তুলনায় তহবিল খুবই কম। এদিকে রোহিঙ্গারা বলেছেন, তারা মায়ানমারে ফিরতে পারছেন না, বাংলাদেশেও কাজের সুযোগ নেই। তাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত।
এ অবস্থায় বিশ্ব যেন রোহিঙ্গাদের দুর্দশার কথা ভুলে না যায়। মুহম্মদ তাহের নামে বাংলাদেশে আশ্রিত এক রোহিঙ্গা বলেন, ‘বিশ্ব সম্প্রদায়ের আমাদের দুর্দশার কথা ভুলে যাওয়া উচিত নয়। যতটা সম্ভব আমাদের সাহায্য করা উচিত। আমাদের এখানে কাজ করার অনুমতি নেই। খাদ্যের জন্য সাহায্য সংস্থাগুলোর ওপর নির্ভর করতে হয়। রোহিঙ্গারা বলেছেন, তারা জীবনের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা এবং মায়ানমারে ফিরে যাওয়ার আগে নাগরিকত্বের স্বীকৃতি চান। রাষ্ট্রসংঘ বলছে, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য এখনও উপযুক্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। উল্লেখ্য, রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগে আন্তর্জাতিক আদালতে মায়ানমারের বিচার চলছে।