আইভি আদক,হাওড়াঃ হাওড়ার এমসি ঘোষ লেনে একই পরিবারের চারজনকে কুপিয়ে হত্যার পর থেকেই ছড়িয়েছে তীব্র আতঙ্ক। পরিবারের সদস্যরাও জানিয়েছেন আক্ষরিক অর্থেই রণচন্ডীর ভূমিকায় ছিলেন ওই অভিযুক্ত মহিলা। রক্ত মাখা কাটারি হাতে যাকে পাচ্ছিলেন আক্রমণ করছিলেন। পল্লবী এবং দেবরাজের কাছে কেউ যাওয়ার সাহসই পাচ্ছিলেন না।
অভিযুক্তের আত্মীয় জাঠতুতো কাকার ছেলে সুব্রত ঘোষ জানান, সম্পত্তিগত কারণেই দুই ভাইয়ের মধ্যে অনেকদিন ধরে সম্পর্ক খারাপ ছিল। বাবাকে মারছে বলে তৃয়াশা এসে আমাদের ডাকল। গিয়ে দেখি রক্তাক্ত অবস্থা। দেবরাজের হাতে একটা ধারালো অস্ত্রের মতো কিছু ছিল। পাড়ার অনেকে গিয়ে আটকানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু রাখা গেল না। যে কোনও মুহুর্তে আমাদের কিছু একটা ঘটে যেতে পারত। দুই ভাইয়ের সঙ্গে গন্ডগোল অনেকদিনের। আমাদের আসতে দেখে হাতে থাকা ধারালো অস্ত্র নিয়ে আমাদের সরিয়ে দিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়। এই ঘটনার পর পুলিশে খবর দেওয়া হয়। মেয়েটা যখন এসে বলল বাবাকে মারছে আমরা এগিয়ে গিয়েছিলাম।
বারেবারে বলা হয়েছিল না মারার জন্য। কিন্তু সে কথা শোনেনি। ও নিজের মধ্যে ছিলনা। যা মনে করছে তাই করে যাচ্ছিল। আমরা বাঁচাতে গিয়েছিলাম। তখনও সে মারছিল। আমরা যাবার পর সে আমাদের ধাক্কা মারে। তার ধাক্কায় ছিটকে পড়ে যাই। মনে হচ্ছে পারিবারিক অশান্তির জন্য এই ঘটনা ঘটেছে। তবে পাড়ায় কারও সঙ্গে খারাপ ব্যবহার কোনওদিন করেনি।
এই ঘটনা নিয়ে প্রাক্তন কাউন্সিলার গৌতম দত্ত জানান, রাতেই তিনি জানতে পারেন পারিবারিক অশান্তির জেরে চারজন খুন হয়েছে। এর আগেও এদের পরিবারে অশান্তির ঘটনা ঘটেছে। এই নিয়ে পার্টির কাছে ওরা জানিয়েছিলেন। সেই সমস্যা বাড়িতে গিয়ে মিটিয়েছিলাম। ৩ বছর আগে পারিবারিক অশান্তির জেরে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ওই ছেলেকে। পরে মা কেস তুলে নেওয়ায় সে জেল থেকে ছাড়া পায়। এদিন যা ঘটেছে তা স্বপ্নেও ভাবতে পারিনি। মৃত মহিলা দলের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। রাখীবন্ধন উৎসব উপলক্ষে এদিন দলের একটা কর্মসূচি ছিল। দলীয় কর্মী মারা যাওয়ায় তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতে এদিনের কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে।
অন্যদিকে, এই ঘটনা প্রসঙ্গে বাড়ির এক আত্মীয় জানান, বাড়ির ছোট ছেলে এবং বৌমা উৎশৃঙ্খল ছিল। তারা প্রায়শই সামান্য বিষয় নিয়ে পরিবারের লোকেদের সঙ্গে গণ্ডগোল করত। এরপরেই এমন ঘটনা ঘটে। এটা পূর্ব পরিকল্পনামাফিক ঘটেছে বলেই তাঁরা মনে করছেন।