পুবের কলম ওয়েব ডেস্কঃ কয়লা পাচার কাণ্ডে সিবিআই-এর পর এবার তৎপর ইডি (এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট)। ৮ জন আইপিএস অফিসারকে এবার তলব করল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। চলতি বছরের জুলাই মাসে, সেন্ট্রাল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (সিবিআই) কয়লা পাচার কাণ্ড মামলায় ৪১ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দায়ের করেছিল।
সূত্রের খবর, ৮ জনের তালিকায় রয়েছেন রাজ্য পুলিশের ডিজি জ্ঞানবন্ত সিং, এছাড়াও আইপিএস অফিসার ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, রাজীব মিশ্র, সুকেশ জৈন, শ্যাম সিং, তথাগত বসু, সেলভা মুরগান, কোটেশ্বর রাওদের মতো প্রথম সারির পুলিশ কর্তার। এছাড়াও বেশ কয়েক আইএএস অফিসারও এই ঘটনায় যুক্ত রয়েছেন বলেই সূত্রের খবর।
ইডি সূত্রে খবর, গত ১৫ অগাস্ট-এর পরই তাঁদের দিল্লিতে হাজিরা দিতে বলা হয়েছে। কয়লা পাচারকান্ডে কয়লা মাফিয়াদের সঙ্গে জিজ্ঞাসাবাদে ওই অফিসারদের নাম উঠে এসেছে। সেই পরিপেক্ষিতেই তাঁদের তলব করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
আরও পড়ুনঃকয়লা পাচার কাণ্ডে ৪১ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিল সিবিআই
উল্লেখ্য, কয়লা পাচার কান্ডে যেই ৮ অফিসারকে তলব করা হয়েছে তারা কোনও না কোনও সময় আসানসোল, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া জেলায় কর্মরত ছিলেন। এবং কয়লা পাচার মামলার মূল জায়গা এই অঞ্চলগুলিই।
সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, ২২ থেকে ৩১ অগাস্টের মধ্যে ইডি এই ৮ অফিসারদের দফায় দফায় জেরা করবে। তার মধ্যে রাজ্য পুলিশের ডিজি জ্ঞানবন্ত সিংকে ২২ তারিখ তলব করবে ইডি।
ওয়াকিফাল মহলের মতে এই সব অফিসার জেলা পুলিশ সুপার দায়িত্বে থাকাকালীন কয়লা ও গরু পাচার কাণ্ডের একাধিক মামলা দায়ের হয়েছিল। সেসব মামলার ফাইল ঘাঁটতে গিয়ে আর্থিক লেনদেনের উৎসের সন্ধান করতেই ইডি তাঁদের জেরা করতে চায়।
প্রসঙ্গত, কয়েকমাস আগে কয়লা পাচার কাণ্ডে বেশ কয়েকবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর স্ত্রী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
চলতি বছরের ১৫ জুলাই, সিবিআই একটি মামলায় চলা তদন্তে ইস্টার্ন কোলফিল্ডস লিমিটেডের তৎকালীন জেনারেল ম্যানেজার (বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত) পাণ্ডবেশ্বর যিনি সুভাস কুমার মুখোপাধ্যায় নামেও পরিচিত তাঁকে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই।তবে সিবিআই ৪১ জন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে যে চার্জশিট দাখিল করেছিল তাতে মামলার প্রধান অভিযুক্ত অনুপ মাঝি এবং প্রাক্তন তৃণমূল কংগ্রেস (টিএমসি) নেতা বিনয় মিশ্রের নাম অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। তবে কয়লা পাচার-কাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত অনুপ মাঝি ওরফে লালা এখনও অধরা।
প্রসঙ্গতও, ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ইসিএল এর কর্মরত কর্মীদের বিরুদ্ধে বেআইনিভাবে কয়লা পাচার ও জালিয়াতি করার অভিযোগ উঠে আসে। তারপর থেকেই ইস্টার্ন কোলফিল্ডস (ইসিএল) তদন্তকারী সংস্থাগুলির স্ক্যানারের আওতায় এসেছে।
আরও পড়ুনঃকয়লা পাচার কাণ্ডে অভিষেকের বাড়িতে সিবিআই, বয়ান রেকর্ড করা হল রুজিরার
এই অভিযোগে আরও বলা হয়েছে যে, তারা রেলওয়ে সাইডিংয়ে রাখা মজুদ কয়লা থেকে বেআইনি ভাবে বিক্রি ও সরবরাহের জন্য কয়লা নিয়েছিলেন। এমনকি কয়লা পাচার কাণ্ডে মূল অভিযুক্তদের কাছ থেকে তারা নগদ ঘুষ নিয়েছিলেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সরকারি কর্মকর্তা ও রাজনীতিবিদদের মদতেই এই কোটি কোটি টাকার অবৈধ কয়লা পাচার করা সম্ভব হয়েছে