পুবের কলম প্রতিবেদক: ব্লক সভাপতি গঠন ঘিরে তৃণমূলের অন্দরেই গোলমাল। আর সেই ঘটনায় প্রাণে মারার আশঙ্কা করছেন মুর্শিদাবাদ জেলার ভগবানগোলার বিধায়ক ইদ্রিশ আলি। ব্লক সভাপতি নির্বাচন ও বাসভবনে হামলার ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, ‘ব্লক সভাপতি করার কোনও অধিকার আমার নেই। ৫০ বছরের রাজনৈতিক জীবনে কোনও দিন কারও কাছ থেকে টাকা নিইনি। কেউ বলতে পারবে না যে আমি টাকা নিয়ে বহু কিছু করে ফেলেছি’।
সোমবার দলের নেতাকর্মীদের একাংশের উপর হামলা হয়। এ নিয়ে বিধায়ক ইদ্রিশ আলি বলেন, আমাকে প্রাণে মারার পরিকল্পনা ছিল। যদিও সেই ঘটনায় যুক্ত সন্দেহে সোমবার রাতে ২ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ঘটনায় মূল অভিযুক্ত মোস্তাফা শেখ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হয়েছেন বলে খবর।পুলিশ সূত্রে খবর, শারীরিক অবস্থার উন্নতি হলে তাঁকে জেরা করা হবে।
প্রসঙ্গত, সোমবার রাতে ভগবানগোলার সুবর্নমৃগী, ডাকবাংলো এলাকায় স্থানীয় বিধায়ক ইদ্রিশ আলির বাসভবনে হামলা চালায় তৃণমূলেরই একটি অংশ। হামলাকারীদের দাবি, টাকার বিনিময়ে দলীয় পদ বিক্রি করেছেন ইদ্রিশ আলি। এই অভিযোগে বাড়ির সামনে রাখা প্লাস্টিকের চেয়ার, বিধায়কের গাড়ি ভাঙচুর করে হামলাকারীরা। সেই সময় ওই বাসভবনেই ছিলেন ইদ্রিশ। ভাঙচুর রুখতে গিয়ে আক্রান্ত হন বিধায়কের ২ সহযোগী।
এ দিকে হামলার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় ভগবানগোলা থানার পুলিশ। পুলিশ আসতেই এলাকা ছাড়ে হামলাকারীরা। সেই রাতেই তৃণমূলের কুঠিরামপুর অঞ্চল সভাপতি মোস্তাফা শেষ-সহ অজ্ঞাতপরিচয়দের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন বিধায়কের আপ্তসহায়ক। ইতিমধ্যেই ২ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
এ দিন এক সাংবাদিক বৈঠকে ইদ্রিশ আলি বলেন, ‘ব্লক সভাপতি করার কোনও অধিকার আমার নেই। ৫০ বছরের রাজনৈতিক জীবনে কোনও দিন কারও কাছ থেকে টাকা নিইনি। কেউ বলতে পারবে না যে আমি টাকা নিয়ে বহু কিছু করে ফেলেছি’। তিনি আরও বলেন, ‘পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য গুলাব শেখ তো চিৎকার করে বলেছে, ছেড়ে দাও ইদ্রিশ আলিকে, ওকে খুন করব’।
সূত্রের খবর, মুর্শিদাবাদ জেলায় একাধিক ব্লক সভাপতি বদল হবে। সেই তালিকায় রয়েছে ভগবানগোলা ১ নম্বর ব্লকের নামও। বর্তমান ব্লক সভাপতি আফরোজ সরকারকে সরিয়ে অন্য কাউকে ব্লক সভাপতি করা হতে পারে বলে খবর। এরই মধ্যে আফরোজ সরকারের দাবি, তাঁকে পদে রাখতে ৫০ লক্ষ টাকা দাবি করেছেন বিধায়ক। তিনি টাকা দেননি তাই সাবিরুল ইসলাম নামে এক তৃণমূল নেতার কাছ থেকে ৪৫ লক্ষ টাকা নিয়েছেন ইদ্রিশ। আরও কয়েকজনের কাছ থেকে ব্লক সভাপতি করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে টাকা তুলেছেন বিধায়ক। তারাই তাঁর বাসভবনে হামলা চালিয়েছে। যদিও টাকা নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিধায়ক।