পুবের কলম প্রতিবেদক: বদলাচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস। দুর্নীতিগ্রস্তদের সরিয়ে ইতিমধ্যেই শুদ্ধিকরণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে রাজ্যের শাসক দলে। এবার দলের কর্মী-সমর্থকদের জন্য কড়া বার্তা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। দলীয় সূত্র থেকে যতদূর জানা যাচ্ছে, তাতে সিদ্ধান্ত হয়েছে জীবনযাত্রায় যদি কোনওভাবে কোনও অস্বচ্ছতা প্রকাশ্যে আসে দল তার সঙ্গে যোগাযোগ রাখবে না।
প্রসঙ্গত, বছর ঘুরতেই লোকসভা নির্বাচন। তার আগে দলকে একটা স্বচ্ছ ভাবমূর্তির দল হিসাবে গড়ে তুলতে বদ্ধপরিকর রাজ্যের শাসক দল।
মনে করা হচ্ছে, সেই জায়গা থেকেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গত সোমবার উত্তরবঙ্গের একটি জেলা এবং দক্ষিণবঙ্গের একটি জেলার নেতৃত্বকে নিয়ে বসেছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। সেখানেই অভিষেকের বার্তা কোন্দল না করে সকলকে নিয়ে পঞ্চায়েত ভোট সম্পন্ন করতে হবে।
এটা জানা গিয়েছে দলের তরফ থেকে এই বৈঠকে স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয়েছে, যে দলের মধ্যে একাধিক লবি আর তাই নিয়ে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, এটা মেনে নেবে না। সকলকে একসঙ্গে মিলেমিশে কাজ করতে হবে।
এমনিতেই কোচবিহার এবং নদিয়া দুই জেলাই আভ্যন্তরীণ গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে বিদীর্ণ। বারবার কোচবিহারের নেতাদের পরস্পর-বিরোধী বয়ান সংবাদমাধ্যমের শিরোনামে হয়েছে। একে অপরকে দোষারোপ করতে পারেন না কেউই। এই অবস্থায় দলের বার্তা নিজেদের মধ্যে কোনও অশান্তি করা যাবে না একজোট হয়ে দলীয় কার্যালয়ে বসে আলোচনার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
ইদানিং সংবাদমাধ্যমে বারবার শিরোনামে উঠে আসছে তৃণমূল নেতাদের সং গত পাঁচ বছরে সম্পত্তির পরিমাণ অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধির প্রসঙ্গ।
এক্ষেত্রেও দলীয় নেতাদের সাবধান করে দিয়েছেন অভিষেক। তাঁর স্পষ্ট বার্তা, স্বচ্ছ ভাবমূর্তি রয়েছে, এমন নেতৃত্বকে সামনে রেখে আগামী দিনে দল চলবে। ছোট থেকে বড় সমস্ত নেতার উপর নজর রাখছে।
কোনওভাবে কোনও নেতা সেই ছোট-ই হোক অথবা বড় যদি দেখা যায়, তার কাজকর্মে অস্বচ্ছতা রয়েছে, তিনি দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়ছেন এক্ষেত্রে দল তার পাশে দাঁড়াবে না।
প্রসঙ্গত, এদিনের বৈঠক ছিল বুথ থেকে শুরু করে ব্লক স্তরে দলীয় সংগঠন ঢেলে সাজানোর ক্ষেত্রে কোন নামগুলো বিবেচনা করা হবে, তা নিয়ে জেলা সভাপতি এবং জেলার জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে আলোচনা।
এক্ষেত্রে জনপ্রতিনিধিদের কাছ থেকে জানতে চাওয়া হয় যে, আগামী দিনে তাদের এই দায়িত্বগুলি দেওয়া যেতে পারে। তাৎপর্যপূর্ণভাবে এদিনের বৈঠক ডাকা হয়নি দুর্নীতির অভিযোগ ওঠা দুই বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য এবং তাপস সাহা। মানিকবাবু পলাশিপাড়া বিধায়ক আর তাপস সাহা তেহট্টের বিধায়ক। আর এর থেকেই স্পষ্ট শুধু কথার কথা নয়, কাজেও স্বচ্ছতার নীতি মানছে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস।