পুবের কলম প্রতিবেদক: বর্ষা শুরু হতেই শহরে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল এক স্কুল পড়ুয়ার। বিশাখ মুখোপাধ্যায় নামে ওই পড়ুয়া কালীঘাটের ৮৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ছিল। রবিবার জ্বর নিয়ে বাইপাসের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল তাঁকে। এরপর বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টা নাগাদ মৃত্যু হয় ওই বালকের। এই ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে আসে এলাকায়।
আরও চিন্তা বাড়িয়েছে ৮৩ নম্বর ওয়ার্ডে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা। ওই একটি ওয়ার্ডেই বর্তমানে একসঙ্গে ২২ জন আক্রান্ত ডেঙ্গুতে। এদিকে কিছুদিন আগেই কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের মেয়র পারিষদ তথা ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ জানিয়েছেন, এই বছর শহরে ডেঙ্গু ও ম্যালেরিয়ার প্রকোপ তুলনামূলকভাবে বেশ কম। এরপরেই শহরে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে আসতেই পুরসভার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
জানা গিয়েছে, সেইন্ট হেলেন স্কুলের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র বিশাখ মহীম হালদার স্ট্রিট-এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। গত শুক্রবার স্কুল থেকে ফিরে হালকা জ্বর আসে বিশাখের। তারপর থেকে জ্বর আসছিল যাচ্ছিল। কালীঘাট ফায়ার ব্রিগেডের কাছে সন্দীপ মুখোপাধ্যায় নামে এক চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। সবরকম পরীক্ষাই করা হয়েছিল। ভয়ের কিছু ছিল না।
জ্বর না কমায় সোমবার ডেঙ্গির পরীক্ষা করা হয়। দেখা যায় ১ লক্ষ ২০ হাজার প্লেটলেট রয়েছে। চিকিৎসক সবরকম ওষুধ দিয়েছিল। কিন্তু মঙ্গলবার সকাল থেকে জ্বর বাড়তে থাকে বিশাখের। তার মা রুনা মুখোপাধ্যায় ফর্টিস হাসপাতালের কর্মী। তড়িঘড়ি তিনি ছেলেকে ওই হাসপাতালেই নিয়ে যান। সেখানে পরীক্ষা করে দেখা যায়, বিশাখের প্লেটলেট কমে দাঁড়িয়েছে ৩২ হাজারে। চিকিৎসকরা সবরকম চেষ্টা করলেও বাঁচানো যায়নি বিশাখকে।
আজ চিফ ভেক্টর কন্ট্রোল অফিসার ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যাওয়ার কথা। তার পরিস্তিতি খুঁটিয়ে দেখবে। যদি কারোর গাফিলতি থাকে তাহলে ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন ডেপুটি মেয়র তথা মেয়র পরিষদ (স্বাস্থ্য) অতীন ঘোষ। যদিও তাঁর বক্তব্য, বেসরকারি হাসপাতালের মৃত্যু শংসাপত্রে ডেঙ্গু শক বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এই রিপোর্ট পাওয়ার পর কলকাতা পুরসভার প্রাথমিক বিভাগীয় তদন্তে পাওয়া গেছে যে ওই অঞ্চলে একটা উন্নয়নমূলক কাজ চলেছে। যেখানে স্বাস্থ্য বিভাগের ভেক্টর কন্ট্রোল টিম ও সেন্ট্রাল ভেক্টর কন্ট্রোল টিম কাজ করছে। যে কিশোর মারা গেছে তার বাড়ির সামনেও পুরসভার চিকিৎসা কেন্দ্র ছিল। কিন্তু ওই কিশোরকে প্রথমেই স্থানীয় চিকিৎসা কেন্দ্রে দেওয়া হয়নি।