মুহাম্মদ রাকিব, উলুবেড়িয়া: ন্যানো টেকনোলজির প্রয়োগ করে ক্যানসারের চিকিৎসায় কেমোথেরাপির খরচ কীভাবে কমানো যায়, এ নিয়ে উন্নত গবেষণায় ইউনাইডেট স্টেট-এ (নর্থ আমেরিকা) পাড়ি দিতে চলেছেন সাঁকরাইলের আফতাব উদ্দিন। সেখানে কেন্ট স্টেট ইউনিভার্সিটিতে গবেষণার সুযোগ পেয়েছেন মেধাবী আফতাব। তার সাফল্যে উৎফুল্ল পরিবার-সহ গোটা সাঁকরাইলের মানুষ।
ক্যানসারে চিকিৎসায় কোমোথেরাপি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, কিন্তু তা যথেষ্ট ব্যয়বহুল। ফলে এই চিকিৎসার খরচ বহন করতে গিয়ে সর্বস্বান্ত হন বহু ক্যানসার আক্রান্তের পরিবার। কম খরচে কীভাবে ক্যানসার চিকিৎসায় কেমোথেরাপি ব্যবহার করা যায়, তার গবেষণা করতে ওহিও-র কেন্ট স্টেট ইউনিভার্সিটিতে সুযোগ পেলেন হাওড়ার সাঁকরাইলের চকশ্রীকৃষ্ণ মোল্লা পাড়ার বাসিন্দা আফতাবউদ্দিন মোল্লা।
বছর ২৩-এর আফতাব আইআইটি পাটনা থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছেন। সম্প্রতি গ্র্যাজুয়েট রেকর্ড এক্সজামিনেশন (ঝট্টক্ক) পরীক্ষায় ৪৪ র্যাঙ্ক করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দেন রসায়নের এই ছাত্র। তারপরেই কেন্ট স্টেট ইউনিভার্সিটিতে গবেষণা করার সুযোগ পান। ইতিমধ্যে কেন্ট স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে তার হাতে এসে পৌঁছেছে আমন্ত্রণপত্র। আগামী ১২ আগস্ট তিনি রওনা দিতে চলেছেন ইউনাইডেট স্টেটের কেন্ট স্টেট ইউনিভার্সিটির উদ্দেশ্যে।
ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনায় মেধাবী আফতাব উদ্দিন মোল্লা। বাবা বাহাউদ্দিন মোল্লা বিভিন্ন বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক-শিক্ষিকা থেকে শুরু করে পড়ুয়াদের মোটিভেশনের কাজ করেন। মা আমিনা বেগম গৃহবধূ। চকশ্রীকৃষ্ণ প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিকের পড়াশোনা শেষ করে আফতাব উদ্দিন মোল্লা ভর্তি হন স্থানীয় রঘুদেববাটি সাধারণ বিদ্যালয়ে।
তারপর একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির পাঠ নেয় আল-আমীন মিশনের খলিশানি ক্যাম্পাসে। বিজ্ঞান প্রিয় এই মেধাবী পড়ুয়া ডাক্তারি বা ইঞ্জিনিয়ার্স পড়ার দিকে না ঝুঁকে নিজের পছন্দের বিষয় রসায়ন নিয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন বেলুড় মঠ রামকৃষ্ণ মিশন থেকে। তারপর আইআইটি পাটনা থেকে সম্পূর্ণ করেন স্নাতকোত্তর ডিগ্রি।
আফতাব উদ্দিন মোল্লা জানান, ‘ক্যানসার রোগীর চিকিৎসা করতে গিয়ে বহু পরিবারকে সর্বস্বান্ত হতে হয়। এই চিকিৎসায় রেডিয়েশন এবং কেমোথেরাপির প্রয়োগ করা হয়। আর কেমোথেরাপির খরচ যথেষ্ট ব্যয়বহুল। অনেকেই সে খরচ বহন করতে পারেন না। আমার গবেষণার বিষয়, ‘‘কম খরচে কেমোথেরাপির প্রয়োগ। তার জন্য ন্যানো-টেকনোলজির ব্যবহার।’’