কার্তিক ঘোষ, বাঁকুড়া: নার্সিং হোমে আগুন। আর সেই আগুনের হাত থেকে বাঁচতে তিন তলা থেকে মরণঝাঁপ দিলেন রাঁধুনি। কিন্তু মাটিতে পড়ার আগেই হাসপাতালের এক কর্মী তাকে লুফে নেন। প্রাণে রক্ষা পেয়েছেন ওই রাঁধুনি। তবে আতঙ্ক এখনও কাটেনি তাঁর। শুক্রবার সকাল ৯ টা নাগাদ বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর শহরের রবীন্দ্র স্ট্যাচু মোড় সংলগ্ন একটি নার্সিং হোমের এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে।
ওই নার্সিং হোমটির সূত্রে জানা গেছে, এদিন সকাল ৯ টা নাগাদ ভর্তি থাকা রোগীদের খাবার তৈরি হচ্ছিল দোতলায়। সেই সময় ওই রাঁধুনি শম্পা মাঝি তিনতলায় বাথরুমে গিয়েছিলেন। ঠিক সেই মুহূর্তে বিস্ফোরণের শব্দে বাথরুম থেকে বেরিয়ে এসে তিনি দেখেন গোটা রান্নাঘর দাউ দাউ করে জ্বলছে। অপরদিকে নার্সিংহোমে থাকা রোগী এবং তাদের আত্মীয়রা হুটোপুটি করে নিচে নামছেন।
শম্পা দেবী জানিয়েছেন, যদি নিচে নামতে হয় তাহলে আগুনের উপর দিয়ে পার হতে হবে, যার অর্থ অগ্নিদগ্ধ। তাই প্রাণ বাঁচাতে তিনতলায় ফিরে গিয়ে একটি কার্নিশ ধরে বিপদজনকভাবে ঝুলতে থাকেন। সেই সময় তাকে উদ্ধার করতে পাশাপাশি বাঁশের মই লাগিয়ে দু-একজন উদ্ধার করার চেষ্টা করেন। কিন্তু শম্পা দেবী শরীরের ভারসাম্য রাখতে পারছিলেন না। এদিকে শম্পাদেবী যে জায়গায় ঝুলছিলেন, সেই জায়গার নিচে নার্সিংহোমের কর্মীরা সমবেত হয়ে দাঁড়িয়ে পড়েন। এই অবস্থায় শম্পাদেবী তিনতলা থেকে ঝাঁপ মারতেই ওই কর্মীরা তাকে লুফে নেন।
ঘটনার খবর পেয়ে দমকলের একটি ইঞ্জিন আসার আগেই আগুন নিভিয়ে ফেলা হয়েছে বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। ঘটনার খবর পেয়ে নার্সিং হোমে আসেন বিষ্ণুপুর থানার পুলিশ।
দমকলের প্রাথমিক অনুমান গ্যাস সিলিন্ডার ব্লাস্ট হয়েই এই অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। দমকল নার্সিংহোমটির অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা খতিয়ে দেখছে।
শম্পা দেবীর এই মরণঝাঁপের ঘটনা ইতিমধ্যেই মোবাইলের দৌলতে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল।