পুবের কলম প্রতিবেদক: ইসলাম ধর্মে বিয়ার, শ্যাম্পেনের মতো অ্যালকাহল নিষিদ্ধ। তাই ক্রিকেট হোক কিংবা ফুটবল প্রতিযোগিতা জয়ের পর সতীর্থ খেলোয়াড়রা যখন শ্যাম্পেন ও বিয়ারের বোতলে জয় উদযাপন করেন। তখন অবশ্য বিশ্বের বেশিরভাগ মুসলিম খেলোয়াড়রা নীরবেই সেখান থেকে সরে দাঁড়ান। অনেকটাই দূরে দাঁড়িয়ে তারা দলের বাকি সতীর্থদের উচ্ছ্বাস উপভোগ করেন। এমন দৃশ্য ক্রিকেটপ্রেমীরা আগেই বেশ কয়েক’বার মাঠে দেখেছেন। এবার একই দৃশ্য দেখা গেল ভারতীয় ক্রিকেট দলে। ইংল্যান্ডকে ম্যাঞ্চেস্টারে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ২-১ ব্যবধানে হারিয়ে ট্রফি জয়ের আনন্দে মাতোয়ারা হয়ে ওঠে টিম ইন্ডিয়া। সেই আনন্দে গা ভাসিয়ে একটা সময় বিরাট, পন্থরা শ্যাম্পেন উদযাপনে মেতে ওঠেন। যদিও তখনই সেই শ্যাম্পেন উদযাপন থেকে নিজেদের খানিকটা দূরে রাখলেন ভারতীয় দলের দুই মুসলিম ক্রিকেটার মুহাম্মদ সিরাজ ও মুহাম্মদ শামি।
এর আগে ধর্মপ্রাণ মুসলিম ক্রিকেটার হিসেবে ইংল্যান্ডের অলরাউন্ডার মঈন আলি ও আদিল রশিদ নিজের ধর্ম সংস্কৃতির উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন। ২০১৮ সালে কেনিংটন ওভাল টেস্টে রোমাঞ্চ জাগিয়ে ভারতকে ১১৮ রানে হারিয়ে ৪-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতে বিয়ার উদযাপনে মেতে ছিল ইংরেজ ক্রিকেটাররা। সতীর্থ খেলোয়াড়রা যখন শ্যাম্পেন ও বিয়ারের বোতলে জয় উদযাপন করছিলেন তখন একটু দূরে সরে দাঁড়ান মঈন আলি ও আদিল রাশিদ। তারপর নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে প্রথম বিশ্বকাপ শিরোপা জেতার আনন্দে একই কাণ্ড ঘটিয়ে ছিল টিম ইংল্যান্ড। সেখানেও মঈন আলী ও আদিল রশিদকে একই ভূমিকায় দেখে তাদের প্রশংসায় মুখর হয় মুসলিম বিশ্ব। মঈন আলী ও আদিল রশিদের কর্মকাণ্ড দেখে প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছিল বিভিন্ন দেশের মাদকবিরোধী সংগঠন ও স্বাস্থ্য সচেতন মানুষ।
এমনকি সম্প্রতি প্যাট কামিন্সের নেতৃত্বে অস্ট্রেলিয়া প্রথমবার অ্যাসেজ জিতে শ্যাম্পেন উদযাপনে ডুব দেয়। যদিও তার আগে অজিদের অ্যাশেজ জয়ের উদযাপনে সামিল হননি উসমান খোয়াজা। কারণ, ধর্মভীরু উসমান খোয়াজা জানতেন সেখানে শ্যাম্পেনের বোতল খোলা হবে। সেটা মাথায় রেখে অধিনায়ক কামিন্স শ্যাম্পেন উদযাপন বন্ধ রেখে মঞ্চে খোয়াজাকে ডেকে নেন। প্যাট কামিন্সের এই আচরণ অবশ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রশংসিত হয়। যেমনটা হচ্ছে ভারতীয় দলের বোলিং বিভাগের দুই অন্যতম অস্ত্র মুহাম্মদ সিরাজ ও মুহাম্মদ শামিকে ঘিরে। ব্রিটিশদের টি-২০ সিরিজের পর তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে হারানোর আনন্দে ভারতীয় ক্রিকেটাররা যখন ট্রফি হাতে ম্যাঞ্চেস্টারের মাঠে দাপাদাপি করে বেড়াচ্ছেন, তখন দেখা গেল এক ভিন্ন ছবি। ট্রফি হাতে ভারতীয় দল যখন পোজ দিতে শুরু করছে, তখন শার্দুল ঠাকুর, ঋষভ পন্থ শ্যাম্পেনের বোতল হাতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন। যেটা দেখে আগে-ভাগে সেখান থেকে দৌড় দিয়ে বেরিয়ে যান মুহাম্মদ সিরিজ। অন্যদিকে, মুহাম্মদ শামিকেও দেখা যায় ভারতীয় দলের শ্যাম্পেন উদযাপন থেকে নিজেকে দূরে রাখতে।