পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: ‘বদলির হুমকি’র ঘটনায় বিচারপতির এইচ পি সন্দেশের নিরাপত্তা চেয়ে কর্নাটক হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে। আবেদনকারী আইনজীবী আদালতে জানিয়েছেন, প্রকাশ্য আদালতে এইভাবে বিচারপতির বদলির বিষয়ে নিয়ে শুনানি সম্ভবত ভারতীয় বিচার বিভাগের অধীনে নজিরবিহীন ঘটনা।
মামলাকারী আইনজীবী কর্ণাটক হাইকোর্টের একটি জনস্বার্থ মামলা করে বিচারপতি এইচপি সন্দেশকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা প্রদানের জন্য আদালতকে রাজ্যকে নির্দেশ দেওয়ার আবেদন জানান। একটি মামলা পর্যবেক্ষণের জন্য বিচারপতিকে তাকে বদলির হুমকি পেতে হয়। সেই পরিপ্রক্ষিতে সিট-এর তদন্ত চেয়ে ও বিচারপতির নিরাপত্তা চেয়ে আদালতে আবেদন জানান মামলাকারী আইনজীবী রমেশ নায়েক এল।
আবেদনে বলা হয়েছে, প্রকাশ্য আদালতে বিচারপতির বদলির হুমকিতে শুনানি সাধারণ মানুষের মনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি করতে পারে। এর ফলে ভারতীয় আইন ব্যবস্থার বিশ্বাসে আঘাত আসতে পারে।
উল্লেখ্য, কর্ণাটকের হাইকোর্টের বিচারপতি এইচ পি সন্দেশ এক মামলার রায়ে কর্ণাটকের অ্যান্টি করাপশন ব্যুরো বা এসিবিকে ভর্ৎসনা করেন। বিচারপতির নির্দেশে এসিবির বিরুদ্ধে যায় কর্ণাটক হাইকোর্টের নির্দেশ।
এর পর, কর্ণাটকের অ্যান্টি করাপশন ব্যুরো বা এসিবি সেই মামলা নিয়ে দ্বারস্থ হয় সুপ্রিম কোর্টের। তবে এই পুরো মামলায় বারবার সামনে আসে বিচারপতিকে বদলির হুমকির অভিযোগ।
সম্ভবত সমগ্র ভারতীয় বিচার ব্যবস্থার ইতিহাসে এই প্রথম যেখানে বিচারপতি এইচপি সন্দেশ একটি প্রকাশ্যে আদালত কক্ষে “বদলির হুমকির” আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
একটি ফৌজদারি পিটিশনের শুনানির সময় এবং দুর্নীতি দমন ব্যুরো (এসিবি) এবং তার প্রধানের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তাকে ভর্ৎসনা করেন।
জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে একটি আদেশের বিনিময়ে ৫ লক্ষ টাকা ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া একজন আসামীর জামিন আবেদনের শুনানির সময় পর্যবেক্ষণগুলি করে আদালত। বিচারপতি সন্দেশের ভর্ৎসনার মুখে পড়েন এডিজিপি সীমান্ত কুমার সিং।
পরবর্তীকালে ১১ জুলাই পাস করা একটি আদেশে, ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলি সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে লিপিবদ্ধ করে আদালত।
সেই লিপিবদ্ধ আদেশ অনুযায়ী, হাই কোর্টের বিচারপতি রাজ অবস্থীর বিদায়ী নৈশ ভোজে এই বদলির হুমকি দেওয়া হয়েছিল বিচারপতিকে। একজন মাননীয় বিচারপতি আমার পাশে বসে জানান, তার কাছে একটি ফোন এসেছিল দিল্লি থেকে (নাম জানাননি)। তিনি আমার সম্পর্কে জানতে চেয়েছিলেন। আমি তাকে জানাই আমি কোনও রাজনৈতিক দলের কর্মী নই। তখনও বিচারপতি না থেমে বলেন, এডিজিপি উত্তর ভারতের একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি। একজন বিচারপতিকে সেই রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে বদলি করা হয়েছে, কিন্তু সেই বিচারপতির কোনও ভুল ছিল না।’
এর পর বিচারপতির সন্দেশের মন্তব্য থেকে অব্যাহতি চেয়ে এবং এডিজিপি সীমান্ত কুমার সিংয়ের পরিষেবা রেকর্ড চেয়ে বিচারপতির দেওয়া আদেশ বাতিল করার জন্য সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় এসিবি । যা নিয়ে রাজ্য-রাজনীতিতে ঝড় ওঠে।