পুবের কলম প্রতিবেদক: প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের একক বেঞ্চর সিবিআই তদন্ত ও বেশ কিছু শিক্ষককের চাকরি বরখাস্ত করেছে। এবার সেই সিঙ্গল বা একক বেঞ্চের নির্দেশ নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন উঠল শুনানিতে। মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টে একক বেঞ্চের নির্দেশে চাকরি যাওয়া প্রার্থীদের আইনজীবীরা নানান প্রশ্ন তোলেন। শুনানির সময় আদালতে প্রশ্ন তোলেন আইনজীবীরা। তাঁদের প্রশ্ন, প্রথম শুনানিতেই ওই একক বেঞ্চ চাকরি বাতিল করে কোন এক্তিয়ারে? আদালত কি স্কুল চালায় বা শিক্ষক নিয়োগ করে? প্রথম দিনেই কেন সিবিআই চলে এল জানতে চান আইনজীবীরা।
এ দিন চাকরি হারানো শিক্ষকদের হয়ে সওয়াল করেন আইনজীবী মিলন ভট্টাচার্য ও একরামুল বারি প্রমুখ। অন্যদিকে রাজ্য সরকারের আইনজীবী জয়দীপ কর প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের চেয়ারম্যান মানিক ভট্টাচার্যের অপসারণের সিদ্ধান্তকেও চ্যালেঞ্জ করেন।
প্রশিক্ষিত চাকরিপ্রার্থীদের আইনজীবী একরামুল বারি বলেন, যাঁদের চাকরি বাতিল হয়েছে, তাঁরা সকলেই প্রশিক্ষিত। মামলাকারী সম্ভবত প্রশিক্ষিত পরীক্ষার্থী নন। মামলাকারীর আবেদনের কোনও যৌক্তিকতাই নেই। অপর আইনজীবী মিলন ভট্টাচার্য বলেন, প্রথম শুনানিতেই চাকরি বাতিল করার আইনি ক্ষমতা নেই একক বেঞ্চের। এটা কোনও জনস্বার্থ মামলা নয়। কোন যুক্তিতে আমার মক্কেলের শিক্ষকতা করার অধিকার আদালত কেড়ে নিল। যিনি যে পাঁচ বছর ধরে শিক্ষকতা করলেন, তাঁকে আদালত এক কথায় বহিষ্কার করতে পারে না। আইনজীবীর এমন সওয়ালের পর বিচারপতি সুব্রত তালুকদার বলেন, এখনও স্বাভাবিক ন্যায়বিচার লঙ্ঘনের মতো ঘটনা ঘটেনি। চাকরি হারানো প্রার্থীরা একক বেঞ্চে যান। সেখানেই তাঁরা সুবিচার পাবেন। সেখান থেকেই তাঁরা চাকরি ফেরত পেয়ে পরিজনদের কাছে ফিরে যাবেন। মামলার পরবর্তী শুনানি বৃহস্পতিবার।
অন্যদিকে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের চেয়ারম্যান মানিক ভট্টাচার্যের অপসারণ নিয়ে আদালতে প্রশ্ন তোলেন রাজ্য সরকারের আইনজীবী। মঙ্গলবার আইনজীবী জয়দীপ কর বলেন, আদালত কোন অধিকারে চেয়ারম্যান পদ থেকে মানিক ভট্টাচার্যকে সরিয়ে দিল। এই নিয়োগ তো বেআইনি নয়। সেই নিয়োগ নিয়ে আদালতে কেউ চ্যালেঞ্জ করেনি।
আদালত মানিকের সম্পত্তির হিসাব চেয়েছে। এ নিয়ে আইনজীবী জয়দীপ কর বলেন, সিবিআই খুঁজে দেখুক, মানিকের কী সম্পত্তি আছে। তাঁর স্ত্রী, মেয়ের কী সম্পত্তি আছে, তা জানার বিষয় কি আদালতের এক্তিয়ারের মধ্যে পড়ে? তিনি অবিলম্বে একক বেঞ্চের রায় খারিজ করার দাবিও জানান।