পুবের কলম ওয়েবডেস্কঃ নরেন্দ্র মোদি-অমিত শাহদের চ্যালেঞ্জকে রুখে দিয়ে রাজ্যে তৃতীয়বার তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় ফেরার পরেই জুন মাসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রধানমন্ত্রী চেয়ে সোশ্যাল মিডিয়া টু্ইটারে ঝড় উঠেছিল। ‘বাঙালি প্রধানমন্ত্রী’ হ্যাশটাগ দিয়ে প্রচার ট্রেন্ডিং হয়ে গিয়েছিল। তার পরে থিতু হয়ে গিয়েছিল বিষয়টি। সোমবার তৃণমূল সুপ্রিমোর দিল্লি সফরের আগে আচমকাই টু্ইটারে ঝড় তুলল ‘আব কি বার– দিদি সরকার।’ শুধু তাই নয়– দেশের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মমতাকে চাওয়ার পাশাপাশি মোদি সরকারের বিরুদ্ধেও ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন নেটা নাগরিকরা। কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে বিঁধে লেখা হয়েছে– ‘নেহি চাহিয়ে ফেকু সরকার।’ যদিও টু্ইটারের এমন ট্রেন্ডিংকে গুরুত্ব দিতে চাননি বঙ্গ বিজেপি নেতারা।
রাজ্যে তৃতীয়বার মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে বসার পরে মোদি সরকারকে দিল্লির ক্ষমতা থেকে উচ্ছেদ করা যে তাঁর মূল লক্ষ্য তা খুল্লামখুল্লা জানিয়ে দিয়েছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেই লক্ষ্যে বিজেপি বিরোধী জোট গড়ার সলতে পাকাতে এদিন বিকেলে দিল্লি উড়ে গিয়েছেন তিনি। তৃতীয়বার মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে প্রথমবার দিল্লি পৌঁছে উষ্ণ অভ্যর্থনাই পেয়েছেন মমতা। দিল্লি বিমানবন্দরে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে ঘিরে হুড়োহুড়িও পড়ে যায়। বহু সাধারণ মানুষ মমতাকে দেখে নিজস্বী তোলার জন্য হুমড়িপড়েন।
জাতীয় রাজনীতিতে এই মুহূর্তে বিজেপি বিরোধী জোটের প্রধান মুখ হয়ে উঠেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর জমানায় বাংলায় সাধারণ মানুষের উন্নয়নের জন্য যে সব কল্যাণমূলক প্রকল্প নেওয়া হয়েছে– তা গোটা দেশে পৌঁছে যাক– সেই লক্ষ্যে কোমর কষে ঝাঁপিয়েছেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতারা এবং বিজেপি বিরোধী নেটা নাগরিকরা। বাংলার মডেলকে সামনে রেখেই যে তিনি পরবর্তী লোকসভা ভোটে বিজেপিকে ঘায়েল করতে চান– তা ২১ জুলাই বুঝিয়ে দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই দিন ঘোষণা করেছিলেন– ‘ক্ষমতায় এলে গোটা দেশে ফ্রিতে রেশন দেবো।’ এদিন দিল্লির উদ্দেশে তৃণমূল সুপ্রিমো রওনা হওয়ার আগেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘অব কি বার দিদি সরকার’ শ্লোগান তুলে ধরে বাংলার উন্নয়ন মডেলকেই সুকৌশলে তুলে ধরা হল বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
২০১৪ সালে লোকসভা ভোটের আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিজেপির পক্ষ থেকে শ্লোগান তোলা হয়েছিল– ‘অব কি বার– মোদি সরকার’। সেই সঙ্গে নরেন্দ্র মোদির গুজরাত মডেলকে হাতিয়ার করা হয়েছিল। সেই প্রচারের ঝড়ের সামনে মুখ থুবড়ে পড়েছিল মনমোহন সিং সরকারের যাবতীয় সাফল্য। ১০ বছর বাদে ক্ষমতা থেকে বিদায় নিতে হয়েছিল দেশের অর্থনীতিকে নতুন দিশা দেখানো প্রধানমন্ত্রীকে। তিনশোর বেশি আসন নিয়ে কেন্দ্রের ক্ষমতা দখল করেছিল বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ। এবার সেই বিজেপি’র শ্লোগানের আদলেই ‘অব কি বার– দিদি সরকার’ শ্লোগান তুলে ধরেছে তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে– ‘বিজেপি বিরোধী লড়াইয়ের ভরকেন্দ্রে দলীয় নেত্রীকে বসাতে যে মরিয়া তৃণমূল নেতৃত্ব– তা নয়া শ্লোগানেই স্পষ্ট।’