বিশেষ প্রতিবেদনঃ ঘড়ির কাঁটায় তখন মধ্যরাত। বারোটা বেজে গিয়েছে। ৮ জুলাই পড়ে গিয়েছে। এসে গিয়েছে জন্মদিন। তাই আর ঘরেতে রয় না মন, উচাটন মন এবার ছুটে বেড়াতে চায় লন্ডনের রাস্তায়। করোনা পর্ব কাটিয়ে উঠে এক নতুন দুনিয়ায় প্রবেশ করেছেন সকলে। পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক। তাই ইংল্যান্ডেও আর বিধিনিষেধ নেই। আর যাঁর জন্মদিন তিনি তো আর যে সে মানুষ নন। ইংল্যান্ড তাঁর ঔদ্ধত্য দেখেছে, বিশ্ব ক্রিকেট দেখেছে তাঁর দাদাগিরি। সেই সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় টেস্ট ক্রিকেটে ও ওয়ানডে মিলিয়ে সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন ৪৮টি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে হাফ সেঞ্চুরি করেছেন ১১৫টি। শুক্রবার আরও একটি হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করলেন সৌরভ। জীবনের হাফ সেঞ্চুরি। নিজের পঞ্চাশতম জন্মদিন উপলক্ষ্যে বেশ কয়েকদিন আগেই পৌঁছে গিয়েছিলেন লন্ডনে। পঞ্চাশ নম্বর জন্মদিনটা একটু অন্যভাবে কাটাতে চেয়েছিলেন বিসিসিআই সভাপতি।
কন্যা সানা বর্তমানে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী। তাই ইদানিং স্ত্রী ডোনাকেও থাকতে হয় লন্ডনে। আর সেই কারণেই লন্ডনেই নিজের পঞ্চাশ নম্বর জন্মদিনকে খুব ‘স্পেশ্যাল’ করে তুলতে চেয়েছিলেন মহারাজ। বাড়িতে অনুষ্ঠান, তাঁর জন্মদিন উপলক্ষ্যে বিসিসিআইয়ের দেওয়া পার্টিতে সস্ত্রীক শচীন তেন্ডুলকর, অভিষেক ডালমিয়াসহ একাধিক তারকার উপস্থিতি।
তবে ৮ জুলাইয়ের মধ্য রাতে লন্ডনে যেভাবে জন্মদিন সেলিব্রেশন করলেন সৌরভ তার কোনও তুলনা হয় না। দেখে কে বলবে কিছুদিন আগে তাঁর হৃদযন্ত্রে দুটি স্টেইন বসেছে। এত ফিট? দেখে মনে হবে এখনও ব্যাট হাতে মাঠে নামলে অফ সাইডের রাজার মতোই ছক্কা হাঁকিয়ে দেবেন বাঙালির ক্রিকেট আইকন। পঞ্চাশেও চির তরুণ সৌরভ।
জন্মদিনকে আরও বিশেষ করে তোলার জন্য সপরিবার ঘুরতে গিয়েছিলেন লর্ডসে। ন্যাটওয়েস্টের ঔদ্ধত্য নতুন করে সৌরভকে সুরভিত করল।
লন্ডনের রাস্তায় কেক কেটে যখন সবাই সৌরভের জন্মদিন পালনকে বিশেষ রুপ দিতে চাইছেন তখনই সৌরভ ফিরে গেলেন তাঁর যুবক বয়সে। মেয়ে সানা তাঁর মোবাইলে তখন বাজাচ্ছেন ‘ওম শান্তি ওম’।
আর সেই গানে নেচে মাতালেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। সৌরভকন্যা চিরকালই একটু লাজুক প্রকৃতির। বাবা সৌরভের নাচ দেখে সানা হাসি লুকোতে পারছিলেন না। কিন্তু সৌরভ তাঁর পারিবারিক বন্ধুদের সঙ্গে নিজের জন্মদিন সেলিব্রেশনে পেশাদার ড্যান্সারের মতো বেশ কিছুক্ষণ নাচলেন। শুধু তাই নয়, ‘কালা চশমা’, ‘লন্ডন থুমকদা’ গানের সঙ্গেও নাচলেন সৌরভ। শুধু তিনি নন, সানাকে হিন্দিতে মোবাইল রেখে দেওয়ার কথা বলে তাঁকেও নাচতে বাধ্য করলেন। সৌরভকন্যা কিছুটা লজ্জা পেলেন বাবার সঙ্গে নাচতে। সৌরভ পত্নী ডোনা মেয়েকে বললেন, ‘আরে এটা তোমার বাবার জন্মদিন।’