পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: রিলায়েন্স জিও’র দায়িত্বে মুকেশ আম্বানির পুত্র আকাশ আম্বানি। ছেলের হাতে দায়িত্ব সঁপে দিয়ে ডিরেক্টর পদে ইস্তফা দিলেন মুকেশ আম্বানি। বোর্ডের নতুন চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পেতে চলেছেন আকাশ। সংশ্লিষ্ট সংস্থার তরফে এক বিবৃতি জারি করে মুকেশ আম্বানির ইস্তফার কথা জানানো হয়। সংস্থার ডিরেক্টর পদে পাঁচ বছরের মেয়াদে রমিন্দর সিং গুজরাল ও কেভি চৌধুরীর নাম ঘোষণা করা হয়েছে।
আর কিছুদিন বাদেই দেশে শুরু হতে চলেছে ফাইভ জি পরিষেবা। তার আগে আকাশ আম্বানির চেয়ারম্যান পদে বসা অবশ্যই তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
সংস্থার তরফ থেকে বিবৃতি দিয়ে বলা হয়, ‘রিলায়েন্সের ডিরেক্টর পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন মুকেশ আম্বানি। সংস্থার নতুন ডিরেক্টর পদে বসতে চলেছেন নন এগজিকিউটিভ ডিরেক্টর মুকেশ আম্বানি-পুত্র আকাশ আম্বানি। ২৭ জুন একটি বৈঠকের পর কোম্পানির বোর্ডের তরফ থেকে আকাশের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টের পদ নিয়োগ করা হল পঙ্কজ মোহনকে। মেয়াদ পাঁচ বছর। কেভি চৌধুরি এবং রামিন্দর সিং গুজরালকে সংস্থার ইন্ডিপেনডেন্ট ডিরেক্টর পদে নিয়োগ করা হয়েছে।’ সংস্থার এই পরিবর্তনের খবর স্টক এক্সচেঞ্জ বোর্ডকেও দেওয়া হয়েছে।
বলা যায়, কার্যত আকাশের কাঁধে এক বড়সড় দায়িত্ব এসে পড়ল। একদিকে রিলায়েন্সের ভাবমূর্তি অক্ষুন্ন রাখা অন্যদিকে সংস্থার মুনাফার দিকে নজর দিতে হবে মুকেশপুত্রকে।
উল্লেখ্য, বর্তমানে মুকেশ আম্বানির বয়স ৬৫ বছর। তার তিন ছেলে মেয়ের মধ্যে বড় আকাশ। এর পর কন্যা ঈশা ও ছোট ছেলে অনন্ত। অনুমান এর পর কোম্পানির রিটেলের ব্যবসা ঈশার কাঁধে তুলে দেওয়া হতে পারে। ৩০ বছর বয়সী ঈশা, পিরামল গ্রুপের অজয় ও স্বাতী পিরামলের পুত্র আনন্দ পিরামলকে বিবাহ করেছেন। আকাশ এবং ইশা রিলায়েন্স রিটেইল ভেঞ্চারস লিমিটেডের বোর্ডে ছিলেন। যে সংস্থাটি ইলেকট্রনিক্স, খাদ্য, ফ্যাশন, জুয়েলারি, জুতো এবং পোশাক, জিও মার্ট, অনলাইন রিটেল ভেঞ্চার পরিচালনা করে।
১৯৭৩ সালে রিলায়েন্স প্রতিষ্ঠা হয় ধীরাজলাল হীরাচাঁদ আম্বানির হাত ধরে। লোকমুখে তিনি ধীরুভাই আম্বানি নামে পরিচিত। তিনি টেক্সটাইল, তেল থেকে টেলিকম পর্যন্ত পারিবারিক ব্যবসা প্রসারে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।
কিন্তু ২০০২ সালে তার আকস্মিক মৃত্যুর পর সাময়িক অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। মুকেশ ও তার ছোট ভাই অনিল আম্বানির মধ্যে দূরত্ব বাড়তে থাকে। দুই ভাইয়ের তিক্ত সম্পর্কের কারণে মা কোকিলাবেন দুই ছেলের মধ্যে ২০০৫ সালে রিলায়েন্সের সম্পদ ভাগ করে দেন। মুকেশ পরিশোধন, পেট্রোকেমিক্যালস, তেল ও গ্যাস এবং টেক্সটাইল ব্যবসা পেয়েছিলেন। অনিলকে টেলিকমিউনিকেশন, অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট, এন্টারটেইনমেন্ট এবং পাওয়ার জেনারেশন ব্যবসার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল।
মুকেশের ব্যবসা ফুলে ফেঁপে উঠলেও, অনিলের ব্যবসা সে ভাবে লাভের মুখ দেখাতে পারেনি।
২০১৯ সালের মধ্যেই রিলায়েন্সকে বিশ্বের দরবারে পৌঁছে দেন মুকেশ আম্বানি।
মুকেশ পুত্র আকাশও বাবার মতো বিচক্ষণ। জিও-র ফোর-জির ডিজিটাল ইকোসিস্টেম তৈরিতে আকাশের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।
আকাশ ব্রাউন ইউনিভার্সিটিতে অর্থনীতি নিয়ে পড়াশোনা করেছেন। ছোটবেলার প্রেমিকা শ্লোকা মেহতাকে বিয়ে করেন। শ্লোকার পরিবার হীরে ব্যবসায়ী। ২০২০ সালে আকাশ ও শ্লোকার পুত্রসন্তান পৃথ্বীর জন্ম হয়।