পুবের কলম প্রতিবেদকঃ হরিদেবপুরের কিশোরের মৃত্যুর ঘটনার দায় কার, তার সঠিক হদিস পাওয়ার জন্য এবার গোটা ঘটনার তদন্তে নিয়োগ হল ‘থার্ড পার্টি’। সোমবার কলকাতা পুরসভার আধিকারিক ও সিইএসসি আধিকারিদের সঙ্গে সরোজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান রাজ্য বিদ্যুৎ পর্ষদের ইঞ্জিনিয়াররা। আগামী দুদিনের মধ্যে পুরকমিশনারের কাছে এই রিপোর্ট জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। পাশাপাশি, হরিদেবপুরের ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে কলকাতা পুরসভা সিদ্ধান্ত নিয়েছে সমস্ত বিদ্যুতের খুঁটির চেকিং হবে। বর্ষার মরশুমে শহর জুড়ে আর ত্রিফলা জ্বলবে না।
প্রত্যেক বছরেই বর্ষার সময় বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনা যেন শহরে নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেই ঘটনায় নতুন করে রাজ্য প্রশাসনের মুখ পুড়িয়েছে রবিবার হরিদেবপুর বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে কিশোরের মৃত্যুর ঘটনা। এরপরই সোমবার তড়িঘড়ি কলকাতা পুরসভায় পুর কমিশনারকে নিয়ে বৈঠক বসেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। আগামীদিনে এই ধরণের ঘটনা এড়ানোর জন্য আধিকারিকদের একাধিক নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। এ প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, ‘অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা’। আমরা বলেছিলাম বর্ষার আগে যেন সমস্ত লাইট পোস্ট ঠিকঠাক থাকে। তাহলে কেন এই দুর্ঘটনা ঘটল, সেটা জানতে হবে। তার জন্য তদন্ত হবে। কমিশনারকে আমি বলেছি, পুরো ঘটনা এনকোয়্যারি করতে হবে। আমাকে একটা রিপোর্ট দিতে হবে।’’
প্রসঙ্গত, হরিদেবপুরে কিশোরের মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে আসতেই দায় এড়াতে ‘পাসিং দ্যা বল’ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। কলকাতা পুরসভার আলো বিভাগের বক্তব্য, যে পোস্ট থেকে দুর্ঘটনা ঘটেছে তা পুরসভার নয়। বিএসএনএল-এর। আলো কারা লাগিয়েছে তা খোঁজ করা হচ্ছে। যদিও স্থানীয় কাউন্সিলর বলছেন, আলো লাগিয়েছে পুরসভা-ই। সেই প্রশ্নের উত্তরে আলো বিভাগের দাবি, কলকাতা পুরসভার সমস্ত আলোতে টাইমার লাগানো।
সন্ধে ৬ টার আগে কোনওভাবেই আলো জ্বলার কথা নয়। আলো না জ্বললে তাতে বিদ্যুৎ সংযোগ থাকার কথা নয়। কিন্তু মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে সন্ধে ৬ টার আগে। অন্যদিকে, সংস্থার চিফ জেনারেল ম্যানেজার দেবাশিষ সরকারের বক্তব্য, পোল তাদের ছিল এটা ঠিক। কিন্তু বিদ্যুৎ দিতে তারা বলিনি। তাই দায়িত্ব তাদের নয়। কারণ তারা পাওয়ার দেয় না।
দেবাশিষ সরকার আরও জানান জানান, “কলকাতায় এমন ১৫ লক্ষ কানেকশন ছিল। এখন অনেক কমে গেছে। কিছু পোল রাখতেই হয়। কিন্তু পাওয়ার লাগাতে দেওয়া হয় না। আমরা এমন অনুমতি দিই না। আর কেউ অনুমতি নেয়ওনি।” এই ঘটনা প্রসঙ্গে বিদ্যুৎ সংস্থা সিইএসসি-র দাবি, হরিদেবপুরের হাফিজ মহম্মদ ইশাক রোডে সিইএসসি-র সব কেবল ভূগর্ভস্থ। ওই বাতিস্তম্ভটি সিইএসসি-র নয়। ফলত, তার রক্ষণাবেক্ষণও সিইএসসি করে না।