শুভজিৎ দেবনাথ,গয়েরকাটাঃ বনদফতরের অকশন করা কাঠ কিনে নিয়ে যেতে দ্বিগুনের চাইতেই বেশি অর্থ খরচ হচ্ছে টিমবার মার্চেন্টদের। নেপথ্যে জঙ্গলের প্রবেশপথে মধুবনী নদীর ওপর দুর্বল সেতু। জলপাইগুড়ি বনবিভাগের মোরাঘাট রেঞ্জের অন্তর্গত খুটটিমারি সেন্ট্রাল টিমবার ডিপো।
বনদফতরের তরফে এই ডিপো থেকে অকশন করা হয় বহুমূল্যবান কাঠ। এ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের টিম্বার মার্চেন্টরা এখান থেকে কাঠ ক্রয় করেন। তবে কাঠ নিতে গিয়ে দ্বিগুণ মূল্য গুনতে হচ্ছে, কেননা মোরাঘাটের জঙ্গলে প্রবেশের রাস্তার যে সেতু ছিলো সেটা ভেঙ্গে নতুন করে তৈরি হচ্ছে। বেশ কয়েক বছর হয়ে গেলেও এখনও সেতুর কাজ সম্পন্ন হয়নি।
পাশে একটি লোহা দিয়ে চলাচলের জন্য অস্থায়ী ব্রিজ তৈরি করা হয়েছে। তবে সেই ব্রিজের বহন ক্ষমতা খুবই কম। আর এই কারনেই খুটটিমারি ডিপো থেকে ছোট ছোট গাড়িতে কাঠ বোঝাই করে তিন কিলোমিটার দূরে মধুবনী ব্রিজ পার করে রাখা হচ্ছে। ফের সেখান থেকে বড় লরিতে সেই সমস্ত কাঠ লোড করে পাঠানো হচ্ছে বিভিন্ন প্রান্তে। আর এই কারণে একদিকে যেমন শ্রমিকদের মজুরি লাগছে অনেক বেশি পাশাপাশি গাড়ি ভাড়া গুনতে হচ্ছে প্রায় দ্বিগুণ।
তাই টিম্বার মার্চেন্ট থেকে শুরু করে এলাকার ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা চাইছেন খুব দ্রুত এই মধুবনী ব্রিজের কাজ সম্পন্ন করা হোক। নয়তো আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে ব্যবসায়ীদের।
যদিও p.w.d. এর তরফ থেকে জানানো হয়েছে যদি কোনো বড় সমস্যা না হয় তবে আগামী ছয় মাসের মধ্যে ব্রিজের কাজ সম্পন্ন হবে। তবে এর আগে একাধিকবার এই ব্রিজের কাজের গতি নিয়ে একাধিক প্রশ্ন উঠেছে। কাজেই সময়মতো এই ব্রিজের কাজ সম্পন্ন হবে কিনা সেই নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন সকলেই।
ধূপগুড়ি টিম্বার মার্চেন্ট এসোসিয়েশোনের অন্যতম সদস্য সুজিত দাস জানান, ‘ দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে মধুবনী সেতুর ওপর দিকে ভারী গাড়ি চলাচল। সেতুর তৈরি না হওয়ার দরুন আমাদের কাঠ পরিবহনে ও শ্রমিকদের মজুরি দিতে গিয়ে দ্বিগুনের ও বেশি অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে। কবে সেতু তৈরি হবে আর কবে আমরা এই যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাবো তা ভেবে উঠতে পারছি না। ’
গয়েরকাটা ট্রাক ওনার্স এসোসিয়েশনের পক্ষে সুকুমার দত্ত বলেন, ‘ সেতুর বদলে যদি সাময়িক ভাবে একটি কালভার্ট ও তৈরি করা যায় তাহলে ট্রাক মালিক ও শ্রমিকরা কাজ করে খেতে পারতেন। গাড়ি চলাচল না করায় আমাদের চূড়ান্ত ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে।
পূর্ত দফতরের গয়েরকাটা সাব ডিভিশনের সহকারী বাস্তুকার সঞ্জয় ভগত জানান, ‘ করোনা পরিস্থিতির মধ্যে এই সেতুর কাজ শুরু হয়। বর্ষার মধ্যেও আমরা সেতুর কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। আশা করছি আগামী ছয় মাসের মধ্যে বড় কোন সমস্যা না হলে আমরা এই সেতুর কাজ শেষ করে ফেলবো। ’