পুবের কলম ওয়েবডেস্কঃ মার্কিন কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সেনেটে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণ বিল পাস হয়েছে। বৃহস্পতিবার সিনেটে অনুষ্ঠিত ভোটাভুটিতে বিলটি পাস হয়। এটি প্রায় ৩০ বছরের মধ্যে মার্কিন সিনেটে পাস হওয়া সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণ বিল। বিল অনুযায়ী, ২১ বছরের কম বয়সীদের কাছে অস্ত্র বিক্রির ক্ষেত্রে তাঁদের পারিবারিক ইতিহাস যাচাই করা হবে।
মানসিক স্বাস্থ্যবিষয়ক কর্মসূচির জন্য এবং স্কুলের নিরাপত্তা বাড়াতে ১ হাজার ৫০০ কোটি ডলার পরিমাণ কেন্দ্রীয় তহবিল বরাদ্দের কথা বলা হয়েছে বিলে। এ ছাড়া হুমকি বলে বিবেচিত মানুষদের কাছ থেকে আগ্নেয়াস্ত্র সরিয়ে নিতে ‘রেড ফ্ল্যাগ’ আইন বাস্তবায়নের জন্য অঙ্গরাজ্যগুলোকে উদ্বুদ্ধ করতে তহবিল বরাদ্দেরও প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
আমেরিকায় একের পর এক গুলির ঘটনা ঘটে চলছে। গত ২৪ মে টেক্সাসের একটি স্কুলে নির্বিচার বন্দুক হামলায় ১৯ শিশুসহ ২১ জন নিহত হন। তার কয়েক দিন আগে নিউইয়র্কের বাফেলোয় একটি সুপারমার্কেটে এক বন্দুক হামলায় ১০ জন নিহত হন। এর প্রেক্ষাপটে আমেরিকায় আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইন কঠোর করার দাবি জোরালো হয়। বিলটি পাসের পক্ষে ভোট দিয়েছেন ৬৫ জন। এর মধ্যে ১৫ জন রিপাবলিকান সদস্যও আছেন।
বিলের বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন ৩৩ জন। এখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বিলে স্বাক্ষর করলে তা আইনে পরিণত হবে। কয়েক দিনের মধ্যেই এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে পারে। এর মধ্য দিয়ে আমেরিকায় কয়েক দশকের মধ্যে প্রথমবারের মতো কোনও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণ বিল ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান দুই পক্ষ থেকেই সমর্থন পেল। এর আগে দেখা গেছে, যখনই আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইনকে শক্তিশালী করার প্রশ্ন আসত, তখনই তাতে বাধা দিত রিপাবলিকান পার্টি।
আমেরিকায় আগ্নেয়াস্ত্রজনিত নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিতে আন্দোলনকারী সংগঠন ‘মার্চ ফর আওয়ার লাইভস’ এ বিল পাসের ঘটনাকে স্বাগত জানিয়েছে। ২০১৮ সালে ফ্লোরিডার পার্কল্যান্ড স্কুলে হামলার ঘটনায় বেঁচে যাওয়া মানুষরা এ সংগঠন গড়ে করে তুলেছিল। সংগঠনটির পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘আমরা জানি, এ মহামারির অবসানে আরও অনেক কাজ করতে হবে। অনেক কঠোর পরিশ্রমের পর আমরা আজকের রাতটি পেয়েছি। আমরা সরে আসিনি কিংবা চুপ হয়ে যাইনি।
বন্দুক সহিংসতার অবসানে আমরা আজীবন লড়াই করে যাব।’ তবে ন্যাশনাল রাইফেল অ্যাসোসিয়েশন (বিলটির বিরোধিতা করেছে। তারা বলছে, এ আইন সহিংসতা ঠেকাতে পারবে না। এই বিলটি পাস হলেও নিউ ইয়র্কে প্রকাশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র বহনের পক্ষে রায় দিয়েছে মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট। প্রেসিডেন্ট বাইডেন আদালতের এ রুলিংয়ের নিন্দা ও সমলোচনা করেছেন। বলেন, ‘এই সিদ্ধান্ত সাধারণ জ্ঞান ও সংবিধান, দুটোরই পরিপন্থী। এ সিদ্ধান্ত আমাদের সমাজকে আরও গভীর সমস্যায় ফেলবে।’