পুবের কলম প্রতিবেদকঃ রাজ্যের সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য পদে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকরের পরিবর্তে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বসানোর প্রক্রিয়া আরও একধাপ এগিয়ে গেল।
সোমবার নবান্নে রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, শুধুমাত্র শিক্ষা দফতরের অধীনে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়গুলিরই নয়, সংখ্যালঘু, কৃষি, স্বাস্থ্য ও প্রাণীসম্পদ দফতরের অধীনে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য পদেও বসানো হবে মুখ্যমন্ত্রীকে। রাজ্য বিধানসভার আসন্ন অধিবেশনেই এ সংক্রান্ত বিল পেশ করার প্রস্তুতিও নেওয়া হয়েছে।
সাংবিধানিক প্রধানের দায়িত্ব নিয়ে বাংলায় পা রাখার পর থেকেই আচার্য হওয়ার অধিকারকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের লাগাতার ত্রাসের মধ্যে রাখছেন বলে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে অভিযোগ। এমনকী কথায়-কথায় তাঁদের রাজভবনে তলব করে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার হুমকি দেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে। ফলে অনেক বিশিষ্ট শিক্ষাবিদই উপাচার্য কিংবা প্রশাসনিক পদের দায়িত্ব নিতে আগ্রহী হচ্ছেন না। সাংবিধানিক প্রধান যাতে রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থায় ত্রাস সৃষ্টি না করতে পারেন, তার জন্য আচার্য পদে বদল আনার সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্যের শিক্ষা দফতর।
গত ২৬ মে রাজ্য মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠকের পরে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানান, এখন থেকে শিক্ষা দফতরের অধীনস্থ সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য পদে রাজ্যপালের পদে মুখ্যমন্ত্রীকে বসানো হবে। এ বিষয়ে মন্ত্রিসভার অনুমোদন মিলেছে।
এ দিন রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, কৃষি, স্বাস্থ্য, প্রাণীসম্পদ দফতরের অধীনে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়গুলিরও আচার্য পদেও রাজ্যপালের পরিবর্তে বসানো হবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। মৎস্য ও প্রাণীবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়, বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, হেলথ সায়েন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য হবেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। অর্থাৎ রাজ্যের সব সরকারি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সর্বোচ্চ পদে থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী। এই সিদ্ধান্ত নিয়ে বিজেপি, বাম ও দুই দলের দোসর সংবাদমাধ্যমের একাংশ জলঘোলা করার চেষ্টা করলেও তা খুব একটা পাত্তা দিচ্ছে না রাজ্য সরকার। বরং রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পুঞ্জ কমিশনের সুপারিশ মেনেই শিক্ষা ব্যবস্থাকে রাজভবনের কবলমুক্ত করার প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপাচার্যরা যাতে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারেন এবং দড়ি টানাটানির শিকার না হন, তার জন্যই এমন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী ১০ জুন থেকে রাজ্য বিধানসভার অধিবেশন বসছে। প্রথম দিনের অধিবেশন শোকপ্রস্তাব পেশের মধ্যে শেষ হবে। ১৩ জুন থেকে ১৭ জুন ফের বসবে অধিবেশন। ওই অধিবেশনেই বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য পদে পরিবর্তন-সহ একাধিক বিল আনা হবে। বিলের খসড়া তৈরির জন্য ইতিমধ্যেই আইন দফতরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।