সেখ কুতুবউদ্দিনঃ শনিবার আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের তালতলা ক্যাম্পাসে পশ্চিমবঙ্গ মাদ্রাসা ছাত্র ইউনিয়নের প্রতিষ্ঠাতা ও বিশিষ্ট সমাজসেবি আলহাজ্ব মাওলানা মুহাম্মদ শহীদুল ইসলামের স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়। এদিনের স্মরণসভায় উপস্থিত বিশিষ্টরা মরহুম শহীদুল ইসলামের অবদানের কথা উল্লে’ করেন। পাশাপাশি সমাজের অগ্রগতিতে আলিয়া মাদ্রাসার ভূমিকা, বিশ্ববিদ্যালয়ে উত্তরণ, সাফল্য ও সংকটের কথাও উঠে এসেছে এ দিনের আলোচনায়। উল্লেখ্য মাওলানা শহীদুল ইসলাম গত ২৭ এপ্রিল ৮৩ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন।
স্মরণ সভায় উপস্থিত ছিলেন আবু সালেহ রিজওয়ানুর করিম, আহমদ হাসান ইমরান, মুহাম্মদ কামরুজ্জামান, মাওলামা মোজাফফর হোসেন, মাওলানা আবু সিদ্দিক খান প্রমুখ।
পুবের কলম-এর সম্পাদক ও সাবেক সাংসদ আহমদ হাসান ইমরান মাদ্রাসা ছাত্র আন্দোলনে শহীদুল ইসলামের অবদানের কথা উল্লে’ করে বলেন, মাদ্রাসা ও আলিয়ার বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে শহীদুল ইসলাম দূরদর্শী ভূমিকা নিয়েছিলেন। তিনি বলেন, বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে আলিয়া মাদ্রাসার প্রভাব ছড়িয়ে রয়েছে। ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ আলিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ছিলেন। তাঁর মাধ্যমে সমাজ সমৃদ্ধ হয়েছে। ইমরান বলেন, ‘আগে আলিয়া মাদ্রাসায় লাহোর, কানপুর, দিল্লি, অমৃতসর, সেন্ট্রাল এশিয়া প্রভৃতি স্থান থেকে পড়ুয়ারা পড়তে আসতেন। ’৪৭-এর পর আলিয়া মাদ্রাসাকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা হয়েছিল, কিন্তু মাওলানা আবুল কালাম আজাদের প্রচেষ্টায় সেই প্রয়াস ব্যর্থ হয়েছিল।
আহমদ হাসান ইমরান আরও বলেন, আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকাঠামো উন্নয়নে বরাদ্দ অনেক। কিন্তু এখন সমস্যা হচ্ছে। আলিয়ার সাংবাদিকতা বিভাগে বাংলাভাষীদের পিএইচডিতে সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না। এবারের তালিকায় যে পাঁচ জনের নাম রাখা হয়েছে, তার মধ্যে তিনজন হিন্দীভাষী এবং ২ জন বাঙালি অমুসলিম। আলিয়ায় কেন বাঙালি মুসলিমরা পিএইচডি করতে পারছে না, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।
আহমদ হাসান ইমরান আরও বলেন, আলিয়ায় ইসলামিক থিওলজি বিভাগকে আরও উন্নত করতে হবে। এখন রাজ্যের মুসলিমরা পড়াশোনায় ভালো ফল করছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলছেন। পাশাপাশি বাঙালি মুসলিম ছেলেমেয়েদেরও আইএএস, আইপিএস, ডব্লিউবিসিএস, ইউনানি পড়াশোনায় এগিয়ে আসার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, ‘মুসলিমদের মধ্যে মাজহাব নিয়ে কোনও ঝগড়া নেই। আল্লাহ’র নবী হজরত মুহাম্মদ সা.’কে যারা নিন্দা করে, ছোট করার চেষ্টা করে, তাদের বিরুদ্ধে যুক্তি দিয়ে প্রতিবাদ করলেও কিছু শিক্ষিত মুসলিম নবী সা.-র নিন্দাকারীদের পক্ষে দাঁড়ান।’
স্মরণ সভায় সারা বাংলা সংখ্যালঘু যুব ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ও মাদ্রাসা ছাত্র ইউনিয়নের প্রাক্তন নেতা মুহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, ছাত্র আন্দো লনের মাধ্যমে অধিকার আদায় হয়। এই অধিকার আদায়ে উত্তরসূরী ছাত্রদের সঙ্গে নেওয়া জরুরি। একইসঙ্গে পূর্বসূরীদের পরামর্শ নেওয়াও প্রয়োজন। মাদ্রাসা ছাত্র আন্দোলনে মরহুম শহীদুল ইসলামের অবদান রয়েছে।
অন্যান্য প্রাক্তন ছাত্রনেতাদের মধ্যে ছিলেন আবুল কালাম, গোলাম মইনুদ্দিন, রবিউল ইসলাম, মোফফাকেরুল হোসেন, মুস্তাকিম শাহাজী প্রমুখ’। এছাড়া ছিলেন থিওলজি বিভাগের প্রধান ইমদাদ হোসাইন, মরহুম শহীদুল ইসলামের পুত্র আইনজীবী শোয়েব ‘ান, বুলবুলের সম্পাদক এস এম সিরাজুল ইসলাম। আয়োজক ছাত্রদের মধ্যে ছিলেন মুহাম্মদ মোদ্দাসির, মাসুদুর রহমান, আব্বাসউদ্দিন, নূর ইসলাম, কামরুজ্জামান দফাদার, ফারুক মণ্ডল সহ অন্যান্যরা