পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: বাংলাকে থ্যালাসেমিয়ামুক্ত করতে এবার বিশেষ উদ্যোগ নিল রাজ্য সরকার। রাজ্যের সরকারি ও মেডিক্যাল কলেজে প্রত্যেক প্রসূতির থ্যালাসেমিয়া টেস্ট বা এইচপিএলসি পরীক্ষা করা হবে। বেসরকারি হাসপাতালগুলিতে গর্ভাবস্থার প্রথম ১৬ সপ্তাহের মধ্যেই করাতে হবে এই পরীক্ষাগুলি।
বাংলায় প্রতি বছর ১৫ লক্ষ প্রসব হয়। বেসরকারি হাসপাতালের কোনও প্রসূতি যদি সরকারি ক্ষেত্রে থ্যালাসেমিয়া পরীক্ষা করাতে চায় তাহলে সেই সুযোগও দেবে সরকার। সেক্ষেত্রে রাজ্য ৩৬টি থ্যালাসেমিয়া কন্ট্রোল ইউনিটকে ব্যবহার করতে পারবেন প্রসূতিরা। সেই ইউনিট থেকে বিনামূল্যে থ্যালাসেমিয়া পরীক্ষা করতে পারবে তাঁরা।
বর্তমানে ভারতে প্রতি ঘণ্টায় একজন থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত শিশুর জন্ম হয়। ১০ কোটি জনসংখ্যার বাংলায় ১০-১৫ শতাংশ মানুষ থ্যালাসেমিয়ার বাহক। বর্তমানে রাজ্যে রক্তের এই অসুখে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৫০ হাজারের কাছাকাছি। ১৮ হাজার আক্রান্তকে রক্ত পাল্টাতে হয় নিয়মিত। ২৬ হাজারের সেই প্রয়োজন পড়ে না। তবে চিকিৎসার মধ্যে থাকাটা তাদের অত্যন্ত জরুরি।
থ্যালাসেমিয়া বংশগত রোগ। সক্রামক বা ছোঁয়াচে নয়। সাধারণত জন্মগতভাবে একটি শিশু থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত হয়ে থাকে যা, শিশু ও মা বাবার কোনও ভুল থেকে নয় বরং জেনেটিক্যালি বা জিনগত কারণে সংঘটিত হয়। শিশুর বয়স বৃদ্ধির ২ বছরের মধ্যে রোগ লক্ষণ প্রকাশিত হতে শুরু করে যা পরবর্তীতে ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া তথা পরিক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে এই রোগের নিরুপন করা হয়।
থ্যালাসেমিয়া মেজর বা Cooley anemia তে আক্রান্ত সন্তান বড় হয়ে সাধারণত ৩০ বৎসর পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে।
শিশুর ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি যে সমস্যা দেখা দেয় সেটি হল তার যথাযথ বৃদ্ধি না হওয়া। আর সেই সঙ্গে রক্তস্বল্পতা, অরুচি, দুর্বলতা সহ নানাবিধ সমস্যা দেখা দেয়। শিশুটি স্বাভাবিকভাবে বেড়ে উঠতে পারে না। যথাযথ চিকিৎসা ব্যবস্থা গ্রহণ, নিয়মিত রক্ত সঞ্চালন, ও সঠিক পরিচর্যার মাধ্যমে এ রোগে আক্রান্ত শিশুকে সুস্থ জীবন যাপনের ব্যবস্থা করে দেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি দায়িত্ব। এবার সেই উদ্যোগই নিচ্ছে রাজ্যের সরকার।