পুবের কলম প্রতিবেদক: প্রতিবছর রমযান মাস শুরু হতেই কলকাতার নাখোদা মসজিদ সংলগ্ন জাকারিয়া স্ট্রিট এবং রবীন্দ্র সরণির চিত্রটা সম্পূর্ণ বদলে যায়। এবছর তার ব্যাতিক্রম হয়নি। যদিও লকডাউন এর কারণে গত দু’বছর ধরে অবশ্য সেই ছবিটা দেখা যায়নি। তবে এবার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতেই কিছুটা পুরনো ছন্দে ফিরেছে জাকারিয়া স্ট্রিট। নাখোদা মসজিদ সংলগ্ন রাস্তার দু’ধারে পাঞ্জাবি ,বোরখা, কাপড় থেকে শুরু করে বিভিন্ন পোশাকের পসরা সাজিয়ে বসে গেছে। আর ঈদ পালনের জন্য নতুন পাঞ্জাবি, কাপড় কিনতে দুপুরের চড়া রোদ উপেক্ষা করে এখন থেকে দূর-দূরান্তের বাসিন্দারা এখানে আসতে শুরু করে দিয়েছেন। তবে এ বছরের ক্রেতাদের চাহিদা বিগত বছরগুলোর চেয়ে কিছুটা আলাদা । গ্রীষ্মের দাবদাহে গরমের হাত থেকে রেহাই পেতে সুতির পোশাকেই ক্রেতাদের আকর্ষণ বেশি। তারপর মানুষের হাতে অর্থ কম থাকায় এখন কম দামের পাঞ্জাবী কেনার দিকেই বেশি ঝোঁক মুসল্লিদের।এই বছর রমযান শুরুতে বৃষ্টির দেখা ছিল না। এখন শুরু হয়েছে বৃষ্টি। দাবদাহও কমেছে। মূলত ক্রেতাদের টানতে দোকানে রং বেরংয়ের সুতির পাঞ্জাবি পায়জামার পসরা সাজিয়ে বসেছেন জাকারিয়া স্ট্রিট এর ব্যবসায়ীরা। রমযানের শেষ দিনে জমজমাট জাকারিয়া স্ট্রীট এলাকা ঘুরে এমনই দৃশ্য দেখা গেল। তিন পুরুষ ধরে জাকারিয়া স্ট্রিটের পাঞ্জাবির ব্যবসা করছেন শেখ আবদুল মোমিন ও শেখ মোবারক আলী। আদতে হুগলির বাসিন্দা হলে প্রায় ৭৫ বছরের পুরনো তাদের দোকান কোয়ালিটি স্টোর। এখন সুতির পাঞ্জাবি পাজামা থেকে শুরু করে আরও বিভিন্ন স্টাইলের পাঞ্জাবি সাজানো রয়েছে এই দোকানে। আবদুল মোমিনের কথায় ,প্রতিবছর সুতির পাশাপাশি অন্যান্য ধরনের পাঞ্জাবে বিক্রি হয়ে থাক
মোমিনের বলেন ,প্রতিবছর সুতির পাশাপাশি অন্যান্য ধরনের পাঞ্জাবে বিক্রি হয়ে থাকে তবে এ বছর গরম এবং সেইসঙ্গে গত বছর ধরে লকডাউন থাকার কারণে মানুষের হাতে অর্থাভাবে ফলে এখন মানুষ কম দামের সুতির পাঞ্জাবি বেশি কিনছেন। আদ্দি, চিকন প্রভৃতি সুতির পাঞ্জাবি এখন বেশি কিনছেন ক্রেতারা। ওই রাস্তা ধরেই দু-তিনটি দোকান ছাড়িয়ে আরো একটি পাঞ্জাবির দোকান রঙিন আদ্দি পাঞ্জাবিতে ভর্তি। ওই দোকানের মালিক সৈয়দ ইয়াসিনের কথায়, এবছর খুব বেশি নতুন ধরনের পাঞ্জাবি বাজারে আসেনি। পুরনো স্টাইলের পাঞ্জাবি এখন চলছে। ৪০০ টাকা থেকে শুরু করে ২০০০ টাকা মূল্যের মধ্যে রয়েছে এই সব পাঞ্জাবি । বিগত বছরগুলোতে যেমন দেখা গিয়েছিল মাঝারি থেকে বেশি দামের পাঞ্জাবি বেশি মানুষ কিনছিল । তবে এখন সেই চিত্রটা পুরো উল্টো ।এখন কমদামের পাঞ্জাবি বেশি কিনছেন মানুষ। অন্যদিকে মেয়েদের পোশাকের মধ্যে আমব্রেলা বোরকা, স্ট্রেট লাইন বোরকা প্রভৃতি পোশাক বিক্রি হচ্ছে বলে জানান এস এস শামীম স্টোরের এক কর্মী। তিনি জানান হাজার টাকা থেকে শুরু করে বিভিন্ন মূল্যের বোরখা এখন বিক্রি হচ্ছে।
ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, সাধারণত প্রতিবছর ঈদের ১০ থেকে ১৫ দিন আগে থেকেই বাজার শুরু হয়ে যায়। গত দু’বছর সেই ছবিটা দেখা যায়নি তবে এখন আবার সেই ছবিটা দেখা যাচ্ছে। দু’বছর ধরে গত যেভাবে ব্যবসায়ীদের লোকসানের সম্মুখীন হতে হয়েছে তাদের আশা এবছর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে ফলে তারা কিছুটা লাভের মুখ দেখবেন।