পুবের কলম প্রতিবেদক: ২ মে থেকে সরকারি স্কুলে ছুটি ঘোষণা করেছে রাজ্য। তবে বেসরকারি সব স্কুলে এখনই ছুটি নয়। উল্লেখ্য, তাপপ্রবাহের কারণে গরমের ছুটি এগিয়ে আনার ঘোষণা করার সময়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বেসরকারি স্কুলগুলিকেও ২ মে থেকে ছুটি দিতে বিবেচনা করতে বলেছেন। কিন্তু শহরের বেশ কিছু বেসরকারি স্কুল জানিয়ে দিয়েছে, তারা এখনই গরমের ছুটি দিচ্ছে না। পূর্ব-নির্ধারিত সূচি মেনেই সেই ছুটি পড়বে। আপাতত গরমের জন্য সব রকম সাবধানতা অবলম্বন করে ক্লাস চলবে। কিছু স্কুল অবশ্য জানিয়েছে, ২ মে থেকেই ছুটি দিচ্ছে তারা। তবে যে ক’দিন গরমের ছুটি এগিয়ে আনা হল, সেই ক’দিন অনলাইন ক্লাস চলবে।
এদিকে রাজ্যের কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়েও অনলাইন ক্লাসের ব্যবস্থা করছে।
ইতিমধ্যে সিআইএসসিই বোর্ডের সচিব জেরি অ্যারাথুন জানিয়েছেন, শিক্ষাসচিব মণীশ জৈনের কাছ থেকে গরমের ছুটি সংক্রান্ত একটি নির্দেশিকা পেয়েছেন তিনি। যা ওই বোর্ডের অধীন স্কুলগুলিকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি অবশ্য এ-ও বলেন, এই সংক্রান্ত কোনও আলাদা নির্দেশ আমি দিচ্ছি না। স্কুলগুলি সরকারি নির্দেশিকা মেনে এখনই গরমের ছুটি দেবে কি না,তা তারাই ঠিক করবে। এখন আইসিএসই এবং আইএসসি-র পরীক্ষা চলছে। পরীক্ষার রুটিনে কোনও পরিবর্তনও করা হচ্ছে না বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় বোর্ড।
সাউথ পয়েন্ট স্কুল পূর্ব-নির্ধারিত সূচি মেনেই চলবে। শ্রী শিক্ষায়তন জানিয়েছে, এখনই গরমের ছুটি দিচ্ছেন না তাঁরা। প্রাতর্বিভাগের সময় কমবে। অনলাইন ক্লাসও চালাবে তারা।
হেরিটেজ স্কুলে ২ তারিখ গরমের ছুটি পড়ছে না। তবে দ্বিতীয় শ্রেণি পর্যন্ত প্রাতর্বিভাগের সময় এগিয়ে আনা হবে। বাকি শ্রেণিরও সময় কমবে।
স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গরমের জন্য প্রতিটি ক্লাসে লেবুর জল এবং ওআরএস থাকছে।
অবশ্য লা মার্টিনিয়ারের ছুটি ২ মে থেকে পড়ছে। কিন্তু ২ থেকে ১৩ মে পর্যন্ত অনলাইন ক্লাস হবে। ১৪ মে গরমের ছুটি পড়ে যাবে। রামমোহন মিশন হাইস্কুল জানিয়েছে, তাঁদের স্কুল ২ মে থেকে ছুটি হলেও ২২ মে পর্যন্ত অনলাইন ক্লাস হবে। তার পরে গরমের ছুটি পড়বে। ন্যাশনাল ইংলিশ হাই স্কুল কর্তৃপক্ষ জানায়, গরমের ছুটি এগিয়ে এনে ২ মে থেকেই দেওয়া হচ্ছে। তবে সরকারি স্কুলের মতো দেড় মাস নয়। স্কুল খুলবে এক মাস পরে, অর্থাৎ ২ জুন।
এদিকে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, গরমের সতর্কতা মেনে স্কুল খুললে কোনও অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। শিশুরোগ চিকিৎসকদের মতে,পড়াশোনা বন্ধ করলে চলবে না। তবে গরমে যাতে পড়ুয়ারা অসুস্থ হয়ে না পড়ে, সেটাও দেখতে হবে। তার জন্য স্কুলের সময় এগোনো যেতে পারে।
শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. জুলফিকার বলেন, স্কুলে যেন পড়ুয়ারা প্রচুর পরিমাণ জল খায়। চড়া রোদে ছোটাছুটি চলবে না। শিক্ষকদেরও এটা খেয়াল রাখতে হবে। প্রয়োজনে খেলার ক্লাস বাদ দিতে হবে। বেশি গরমে ছোটাছুটি করলে, ‘এনার্জি লেভেল’ বেড়ে যায়। তাতে নানা ধরনের শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়ায় সমস্যা হতে পারে। শরীর খারাপও হতে পারে। তাই রোদে খেলাধুলো না করাই ভাল। শিশুরোগ চিকিৎসক অপূর্ব ঘোষ বলেন, এখন আর স্কুল বন্ধ করলে চলবে না। পড়ুয়াদের দ্রুত স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরাতে হবে। বৃহস্পতিবার অপূর্ববাবু সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, গরমের ছুটি আগে পড়লেও ছুটির দৈর্ঘ্য না বাড়ানোই ভাল।