মাওলানা আবদুল মান্নানঃ নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন যে, ‘রোযা একটি আমানত সদৃশ’। সবারইও আমানত রক্ষা করা চাই। প্রসঙ্গত তিনি কুরআন মাজিদের এই আয়াত পাঠ করেন, যার অর্থ হচ্ছে , ‘আমানত তার হকদারকে প্রত্যাপর্ণ করার জন্য আল্লাহ্ তোমাদেরকে নির্দেশ দিচ্ছেন।’ (সূরা নিসা– আয়াত : ৫)
পবিত্র কুরআন মজীদের দুই জায়গায় প্রকৃত ঈমানদার ব্যক্তির গুণাবলীর কথা উল্লেখ করে আল্লাহ্তায়ালা বলেন : ‘এবং যারা নিজেদের আমানত ও প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে।’ (সূরা মুমিনুন, আয়াতঃ ৮)
‘এবং যারা আমানত ও প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে, যারা স্বাক্ষ্য দানে অটল এবং নিজেদের নামাযে যত্নবান তারাই সম্মানি হবে জান্নাতে।’ (সূরা মা’আরিজ, আয়াত : ৩২-৩৫)
আমানতদারী ঈমানের আলামত। এই প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ্ সা. বলেছেন: ‘যার মধ্যে আমানতদারী নেই, তার ঈমান নেই এবং যে অধিকার রক্ষা করে না, তার মধ্যে দ্বীন নেই।’ (বায়হাকী, মিশকাত)
আমানতের খেয়ানত (বিশ্বাস ভঙ্গ, তছরুপ) করা মোনাফেকের আলামত। নবী করীম সা. বলেন: ‘মুনাফিকের আলামত তিনটি। যথা, ১) যখন সে কথা বলে মিথ্যা বলে। ২) ওয়াদা করলে তার বরখেলাপ করে বা প্রতিশ্রুতিভঙ্গ করে। ৩) আমানত রাখলে এতে বিশ্বাস ভঙ্গ করে।’ (বুখারী, মুসলিম)
সিয়াম বা রোযা হচ্ছে আল্লাহর আমানত। রমযান মাসের রোযা মানুষকে কঠিন আমানতদারী শেখায়। দিনের বেলা রোযাদার আহার পানীয় ও স্ত্রী সম্ভোগের সুযোগ থাকা সত্বেও একমাত্র আল্লাহর ভয়ে এগুলো থেকে বিরত থেকে আল্লাহর আমানতকে রক্ষা করে। তেমনিভাবে চোখের দৃষ্টি অবনত রাখা , মন্দ বিষয় বা কুদৃশ্যের প্রতি দৃষ্টিপাত না করা এবং আল্লাহর স্মরণ থেকে উদাসীন করে এমন বিষয় বস্তু দেখা থেকে বিরত থাকাই হল রোযা।
হযরত সুফিয়ান সাওরী রহ. বলেন, যে ব্যক্তি রোযা রেখে মিথ্যা কথা, অশ্লীল কথা, পরানিন্দা ও পরচর্চা করল তার রোযা বিনষ্ট হয়ে গেল। কেননা, রসনা আল্লাহর আমানত, সে খেয়ানত করল।
হযরত মুজাহিদ রা. বলেন : দুইটি কাজ রোযা নষ্ট করে দেয়। ১) পরনিন্দা করা ২) মিথ্যা বলা, এই দু’টি বিষয় থেকে রোযাদারকে সতর্ক থাকা উচিত।