দেবশ্রী মজুমদারঃ রামপুরহাট রোযা পেরোলেই হবে শান্তি কমিটি গঠন। সেই কমিটি গ্রামে সমস্তরকম অসামাজিক কাজের বিরুদ্ধে ঐক্যমত গড়ে গ্রামে শান্তি ফিরিয়ে আনতে পুলিশ প্রশাসনকে সর্বোতভাবে সাহায্য করবে। এমনটাই জানালেন বগটুই গ্রামের সব থেকে পুরাতন ঐতিহ্যবাহী বড় মসজিদের সেক্রেটারি মুরতাজ সেখ। তিনি বলেন, আমার বয়স ৩৯ বছর হল। অনেক দেখেছি। ঢের হয়েছে, আর নয়। এই গ্রামের নব্বই শতাংশ মানুষ ভাল। দশ শতাংশের জন্য বদনাম হয়। রোজা পেরোলে গ্রামের মানুষদের নিয়ে শান্তি কমিটি গঠন করা হবে। সেখান থেকেই বোমা বাঁধা, মারামারি এসমস্ত অসমাজিক কাজের বিরুদ্ধে জনমত গঠন করা হবে। এই অসমাজিক কাজ বিলুপ্ত করতে পুলিশ ও প্রশাসনকে সর্বোততভাবে সাহায্য করবে শান্তি কমিটি। তার আগে বুধবার হচ্ছে গণ-ইফতার। বগটুই গ্রাম স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতেই এই গণ ইফতারের আয়োজন, বলছেন বড় মসজিদের পিছনের দিকে সবজি বিক্রেতা আসরাফ সেখ।
মঙ্গলবার দুপুরে প্রায় দুশো বছরের বেশি পুরানো পূর্ব পাড়ার বড় মসজিদের সামনের রাস্তায় চলছে তারই পূর্ব প্রস্তুতি। বাঁধা হচ্ছে ম্যারাপ। ওখানেই তৃণমূল কংগ্রেসের উদ্যোগে গ্রামবাসীদের সাহায্যে গণ-ইফতারের আয়োজন করা হয়েছে। বুধবার সন্ধ্যায় উপস্থিত হবেন ধর্মমত নির্বিশেষে সাধারণ মানুষ। আর সেখানেই দেওয়া হবে শান্তির বার্তা।
এব্যাপারে তৃণমূলের রামপুরহাট-১ ব্লকের সভাপতি সৈয়দ সিরাজ জিম্মির ফোন বন্ধ থাকায় কোনও বক্তব্য পাওয়া যায় নি। তবে ব্লকের বিশেষ পর্যবেক্ষক ত্রিদিব ভট্টাচার্য বলেন, নতুন ব্লক সভাপতি সৈয়দ সিরাজ জিম্মি এলাকায় শান্তি পুনঃস্থাপনের জন্য এই বিশেষ উদ্যোগটি নিয়েছেন। তার প্রশংসা করছি। বড় মসজিদের ইমাম মুফতি মুহাম্মদ ইয়াকুব আলি বলেন, যেটুকু শুনেছি গ্রামের মানুষ এই গণ ইফতারের দায়িত্ব নিয়েছে। এর বেশি কিছু আমার পক্ষে জানানো সম্ভব নয়।
কেমন সংখ্যক মুসল্লি হাজির হয় প্রশ্ন করতেই তিনি বলেন, পূর্ব পাড়ার কুড়ি পঁচিশটি পরিবার এখনও গ্রামে ফেরে নাই। তারা ছাড়া প্রত্যেকেই আসছে। পাঁচ ওয়াক্ত নামায পড়তে তাঁরা যথারীতি আসছেন। মসজিদের সেক্রেটারি মুরতাজ সেখ বলেন, বড় মসজিদ ছাড়াও গ্রামের মধ্যম পাড়ায় সাফা পুকুরের পাড়ে সাফা মসজিদ আছে। আর গ্রামের মুখে একটি মসজিদ আছে। তবে বড় মসজিদ ও সাফা মসজিদে গ্রামের ভিতরের মানুষরা বেশি আসেন। বেশ কয়েকটি ঘরের মানুষ এখনও গ্রাম ছাড়া। তারা ছাড়া সকলেই আসেন। গ্রামে শান্তি আনতে বুধবার থেকেই গ্রামের বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ ও সৈয়দ সিরাজ জিম্মির উদ্যোগে গণ ইফতারের মাধ্যমে শান্তির বার্তা তুলে ধরা হবে সবার কাছে। তারপর রোযা পেরোলেই গড়া হবে শান্তি কমিটি। বেশ কয়েকদিন ধরেই এই মসজিদ থেকেই পরীক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে ঘন ঘন বার্তা দেওয়া হয় যাতে তারা নির্বিঘ্নে পরীক্ষা দিতে পারে বলে জানান বড় মসজিদের ইমাম সাহেব।