পুবের কলম ওয়েবডেস্ক : “পেয়েছি মানব জনম তাইতো করবো শুধু আমৃত্যু মানবতার সেবা।” বিশিষ্ট সমাজসেবী, উদীয়মান কবি তথা লেখিকা আসিয়া খাতুন এর স্বরচিত লাইনের অর্থ অনুধাবন করে জানা যায়, আজকের দিনে দাঁড়িয়ে সমাজের বেশিরভাগ মানুষ যেখানে মানুষকে সাহায্য করা তো দূরে থাক, মানুষের দিকে তাকিয়েও দেখে না এহেন পরিস্থিতিতেও আমাদের রাজ্যের বেশ কিছু যুবক-যুবতী স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা খুলে অনেক অসহায় মানুষের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে, সাধ্যমতো পাশে থেকেছে।
সেরকমই একজন অতি সাধারণ শান্তশিষ্ট পরোপকারী, সমাজের সম্পদ হলো মুর্শিদাবাদের শেরপুরের এক অগ্নিকন্যা আসিয়া খাতুন। বিভিন্ন সংগঠনের মাধ্যমে সংগঠনের সাহায্য নিয়ে সে অনেক মানুষের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে, আবার কখনো নিজে ব্যক্তিগতভাবে কয়েকটি অসহায় পরিবারের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। শুধুমাত্র সোশ্যাল মিডিয়ায় বা ফোন এস এম এস করে নয়, ফিল্ড সার্ভের মাধ্যমেই সে বেশ কয়েকটি অসহায় দরিদ্র মায়েদের হাতে খাবার তুলে দিয়েছে, (তাঁর প্রমাণ স্বরূপ জন্মান্ধ সোয়েদা) কখনো আবার কোনো মানুষের বিশেষ সাফল্যে অসহায়ের মুখে মিষ্টি তুলে দিয়েছে, কখনো আবার অন্য সংগঠনের মাধ্যমে রক্ত যোগাড়ের আপ্রাণ চেষ্টা করেছে। আবার মারণব্যাধি করোনা ভাইরাসের ফলে লকডাউন জনিত কারণে অনেক অসহায় পরিবার চিকিৎসার জন্য ডাক্তারের কাছে না যেতে পারায় তাদের কথা ভেবে উইঙ্গস অফ হোপ নামক সংগঠনের মাধ্যমে মেডিক্যাল ক্যাম্পেরও সাথেও যুক্ত থেকেছে এবং ঔষধপত্র যোগাড়ের ব্যবস্থা করেছে।
এই সব কাজগুলো দেখলেই বোঝা যায় সে কতটা মানবিক, সে কীভাবে নিঃস্বার্থ ভাবে সমাজের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। আসিয়া মানুষ হিসেবে খুব সরল ও ভালো মনের মেয়ে, আর এই তার সরলতার ফলে তাকে অনেক সমস্যার সম্মুখীনও হতে হয়েছে, তবু সে থেমে থাকেনি কখনোই। সততার সঙ্গে কাজ করে চলেছে। এখনকার সময় কোন ছেলে বা মেয়ে তাদের জন্মদিন বন্ধু-বান্ধুবীদের সঙ্গে ভালো কোন রেস্টুরেন্টে গিয়ে পালন করে খুব জমজমাট ভাবে। কিন্তু সেইসব কিছুর উর্ধ্বে গিয়ে অ্যাসোসিয়েশন অব বেঙ্গলি প্রফেশনাল এর অন্যতম সদস্যা তথা সমাজসেবী আসিয়া তার জন্মদিনটা একটু অন্যরকমভাবে পালন করেছে। তার জন্মদিন উপলক্ষে তার ব্যক্তিগত উদ্যোগে খুশি হয়ে অ্যাসোসিয়েশন অব বেঙ্গলি প্রফেশনাল চেয়ারম্যান ডঃ আসিফ আকরাম ও জেনারেল সেক্রেটারি জান্নাতুন ফেরদৌস আলোচনার মাধ্যমে কিছু অর্থ উপহার হিসেবে দেয়, এই উদ্যোগকে সফল করতে।
তাই আসিয়া তার সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব বেঙ্গলি প্রফেশনাল ও তার ব্যক্তিগত উদ্যোগে প্রথমে পথশিশুদের সঙ্গে বহরমপুরের স্কোয়ার ফিল্ডে কেক কেটে তাদের সঙ্গে আনন্দ ভাগ করে নেয় এবং তাদেরকে একটা করে বেলুনও উপহার দেয়। তারপর তাদেরকে খাবারের প্যাকেট ও একটা করে জলের বোতল দিয়ে পথশিশুদের মুখে হাসি ফোটায়। সেখান থেকে আসিয়া মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের ব্লাড ব্যাঙ্কে গিয়ে রক্তদান করে এক মায়ের প্রাণ বাঁচান, ভাবতেই অবাক লাগে যে মেয়েটি ইনজেকশন নিতে পিছু হটে সেও তার দিদি এর মতো এগিয়ে এসেছে রক্তদান করতে। তাকে যত দেখি ততই তার মানবিকতার পরিচয় পাই।
আসিয়া এ কথা জানান যে এই সামাজিক কাজে এগিয়ে আসার ক্ষেত্রে যার ভূমিকা অপরিসীম, যার কথা না বললে নিজেকে অপরাধী মনে হবে, সে জানায় তার সেই অনুপ্রেরণা তার দিদি জান্নাতুন ফেরদৌস, তিনি হলেন এই সমাজের বিশিষ্ট সমাজসেবী তথা রক্তযোদ্ধা,লেখিকা । তার এই উদ্যোগকে কুর্নিশ জানিয়েছেন তার সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব বেঙ্গলি প্রফেশনাল।তার এই বিশেষ দিন উপলক্ষ্যে, মেডিক্যাল ক্যাম্প এর বিষয়ে তার বিশেষ আগ্রহের কথা বিবেচনা করে অ্যাসোসিয়েশন অব বেঙ্গলি প্রফেশনাল মেডিক্যাল ক্যাম্প বিষয়ে একটা টিম গঠন করে, ও তার দায়িত্বে রাখা হয় আসিয়া খাতুনকে ।আসিয়া তার এই বিশেষ দিনে সমাজের কাছে এই বার্তা দিয়েছেন যে, সকলের কাছে অনুরোধ রইলো আপনারাও আপনাদের স্পেশাল দিনগুলোতে অসহায় মানুষের জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়ে তাদের মুখে হাসি ফোটাতে এগিয়ে আসুন।