পুবের কলম প্রতিবেদক : উত্তর-পূর্বের তিনটি রাজ্যে কেন্দ্র সরকার সশস্ত্র বাহিনীর বিশেষ ক্ষমতা আইন ‘আফস্পা’ হ্রাস করেছে৷ তবে জম্মু-কাশ্মীর নিয়ে ভয়ঙ্কর নীরবতা৷ উচ্চবাচ্য নেই উপত্যকার রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যেও৷ উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলি থেকে দীর্ঘদিন ধরে আর্মড ফোর্সেস স্পেশ্যাল পাওয়ার অ্যাক্ট বা আফস্পা প্রত্যাহারের দাবি উঠছে। এমনকি সদ্য সমাপ্ত মণিপুরের বিধানসভা নির্বাচনের সময়েও অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু ছিল আফস্পা। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির তরফেও রাজ্যে ক্ষমতায় এলে আফস্পা তুলে নেওয়ার কথা জানানো হয়েছিল। কিন্তু শেষমেশ মণিপুরের সাধারণ মানুষ বিজেপির ওপরই আস্থা রেখেছিল। গত বছর নাগাল্যান্ডের মন জেলায় সেনা বাহিনীর গুলিতে ১৪ জন নিরীহ গ্রামবাসীর মৃত্যুর পর আফস্পা প্রত্যাহারের দাবি জোরালো হয়েছিল। এবার উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলির দীর্ঘদিনের দাবিকে মান্যতা দেওয়ার পথে এক ধাপ এগিয়েছে কেন্দ্র সরকার। নাগাল্যান্ড, অসম ও মণিপুরের বেশ কয়েকটি অংশ থেকে আফস্পা তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ৷
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বৃহস্পতিবার ঘোষণা করেছেন যে উত্তর-পূর্বের রাজ্যে আফস্পা এক্তিয়ারভুক্ত এলাকার পরিধি হ্রাস পাচ্ছে। কমছে নাগাল্যান্ড, মণিপুর, অসমের আফস্পা এক্তিয়ারভুক্ত এলাকা। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে সরকারের উন্নয়নের কারণেই শান্তি ফিরেছে উত্তর-পূর্বে। পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় আফস্পা এক্তিয়ারভুক্ত এলাকা কমানোর সিদ্ধান্ত৷ উত্তর-পূর্ব ভারতের মানুষকে অভিনন্দন জানিয়ে অমিত শাহ বলেছেন, কয়েক দশক ধরে উত্তর-পূর্ব ভারত অবহেলিত ছিল। এখন সেখানে শান্তি, উন্নয়ন, অভূতপূর্ব অগ্রগতির নতুন যুগ দেখা যাচ্ছে।
এই সিদ্ধান্ত ঘোষণার পরপরই যেসব রাজনৈতিক দল জম্মু-কাশ্মীরে আফস্পা প্রত্যাহার নিয়ে সোচ্চার ছিল, তারা যেন শামুকখোলের মধ্যে ঢুকে পড়েছে৷ দুই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ এবং মেহবুবা মুফতি নীরবতা বজায় রেখেছেন। কোনও টুইট কিংবা কোনও বিবৃতি তাদের পক্ষ থেকে আসেনি৷
পিডিপি নেতারা তাদের মুখ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, যদিও মেহবুবা সব বিষয়ে বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকারের সমালোচনায় সোচ্চার হয়েছেন। এমনকি মেহবুবা ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’ ইস্যুতে কেন্দ্রকে কটাক্ষ করেছেন। তবে এ ব্যাপারে নীরব৷ আফস্পার অধীনে সশস্ত্র বাহিনী ইচ্ছেমতো কাজ করার ব্যাপক ক্ষমতা রাখে। সশস্ত্র বাহিনীর একজন কর্মকর্তা কাউকে গুলি করতে পারেন যদি তিনি মনে করেন যে তিনি আইনবিরোধী কাজ করছেন। আফস্পার অধীনে নিরাপত্তা বাহিনী সম্পত্তি তল্লাশি বা ধ্বংস করতেও পারে যদি তারা বিশ্বাস করে যে এটি সন্ত্রাসীদের আস্তানা হিসাবে ব্যবহৃত হয়। পূর্ববর্তী জম্মু-কাশ্মীর সরকারগুলি আফস্পা তুলে দেওয়া বা হ্রাস করার কাছাকাছি এসেছিল। উভয় ক্ষেত্রেই কেন্দ্রে তখন কংগ্রেসের শাসন ছিল। জম্মুকাশ্মীরের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতার ইতিহাস রয়েছে কংগ্রেসের। এবার তারাও স্বভাবতই মুখ খোলেনি৷