পুবের কলম, ওয়েবডেস্কঃ তীব্র সংকটে শ্রীলঙ্কা। বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতির কারণে বেশ কয়েকদিন ধরেই শ্রীলঙ্কায় খাদ্য ও জ্বালানির সংকট চলছে। সংকটের মুখে কেউ কেউ দেশ ছাড়ছেন। শ্রীলঙ্কা থেকে পালিয়ে আসা ১৬ জন তামিলনাড়ুতে আটক হয়েছেন। এ বছর বৈদেশিক ঋণ পরিশোধে শ্রীলঙ্কার প্রায় ৭ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আছে সাকুল্যে ২ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার। ২০১৯ সালেও এটা ছিল প্রায় সাড়ে ৭ বিলিয়ন ডলার। গত সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে জাতির উদ্দেশে এক ভাষণে বলেন, তাদের বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ ১০ বিলিয়ন ডলার। দেশটির জিডিপির ১০ শতাংশ আসে পর্যটন থেকে। গত বছর এই আয় ৬২ শতাংশ কমেছে। ২০১৯ সালে একটি চার্চে বোমা হামলা এবং করোনা ভাইরাসের কারণে এই খাতে ধস নামে। তাছাড়া সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) কমে গেছে।
সরকারি তথ্য অনুসারে, ২০২০ সালে ৫৪৮ মিলিয়ন ডলার এফডিআই কমেছে। ২০১৯ সালে এফডিআই ছিল ৭৯৩ মিলিয়ন এবং ২০১৮ সালে ছিল ১ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার।
এই অবস্থায় এবার কাগজের সংকট ও দাম বেড়ে যাওয়ায় শনিবার পত্রিকা প্রকাশ করতে পারেনি শ্রীলঙ্কার প্রথম সারির দুটি পত্রিকা। ১৯৪৮ সালে ব্রিটেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের পর দুই কোটি ২০ লাখের দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশটি এর আগে এতটা অর্থনৈতিক সংকটে পড়েনি।
নিউজপ্রিন্ট সংকট ও মূল্যবৃদ্ধির কারণে ইংরেজি দৈনিক ‘দ্য আইল্যান্ড’ ও তার সহ–প্রতিষ্ঠান সিংহলিজ পত্রিকা ‘দিবায়িনা’ ছাপানো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। উপালি নিউজপেপার লিমিটেড এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘আমরা দুঃখের সঙ্গে আমাদের পাঠকদের জানাচ্ছি যে নিউজপ্রিন্ট সংকটের কারণে পরবর্তী নোটিশ না দেওয়া পর্যন্ত দ্য আইল্যান্ডের ছাপা সংস্করণ প্রকাশ বন্ধ রাখতে বাধ্য হচ্ছি।’
১৯৮১ সালের অক্টোবর থেকে ‘দ্য আইল্যান্ড’ পত্রিকা প্রকাশিত হয়ে আসছে। এখন থেকে পত্রিকাটি ই-পেপার হিসেবে প্রকাশিত হবে। এর আগে কাগজ সংকটের কারণে দেশটির প্রায় সাড়ে চার লাখ শিক্ষার্থীর পরীক্ষা বাতিল করতে বাধ্য হয় শিক্ষা বিভাগ।
এছাড়া দেশটির অন্যান্য দৈনিক পত্রিকাগুলোও তাদের পাতা কমিয়েছে। করোনাভাইরাস মহামারির কারণে পর্যটন খাত ও প্রবাসী আয় ধাক্কা খাওয়ায় দেশটির ইতিহাসে বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময়ের সবচেয়ে বড় সংকটে পড়েছে শ্রীলঙ্কা। বেড়েছে নিত্য পণ্যের দাম। জ্বালানি–সংকটের কারণে হাজারো মানুষ ফিলিং স্টেশনের সামনে কয়েক ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন। চলছে লোডশেডিং।