নিজস্ব প্রতিনিধি: কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ পেথেই রামপুরহাটের বগটুইয়ের গণহত্যা নিয়ে তদন্তের প্রস্তুতি নেওয়ার কাজ জোরকদমে শুরু করে দিল সিবিআই। শুক্রবার বিকালেই পুলিশের অভিযোগপত্রের ভিত্তিতে এফআইআর দায়ের করেছে। এফআইআরে খুন, খুনের চেষ্টা, আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে মারা সহ একাধিক ধারা উল্লেখ করা হয়েছে। শুক্রবার রাতেই রামপুরহাটে পৌঁছেছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার তদন্তকারী দল। আজ শনিবার থেকেই অবশ্য আনুষ্ঠানিকভাবে তদন্ত শুরু করবেন। জেলা পুলিশের শীর্ষ আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকের পরে ঘটনাস্থলও পরিদর্শন করার কথা রয়েছে। তাছাড়া ঘটনায় আনারুল হোসেন সহ অন্যান্য ধৃতদের নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জেরাও করবেন।
শুক্রবার সকালেই বগটুই গণহত্যাকাণ্ডের তদন্তভার কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার হাতে তুলে দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের ডিভিশন বেঞ্চ। আগামী ৭ এপ্রিলের মধ্যে তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে রিপোর্ট জমা দেওয়ার জন্যও সিবিআইকে নির্দেশ দেওয়া হয়। ওই নির্দেশের পরে কালক্ষেপন না করে কাজে নেমে পড়েন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা।
সূত্রের খবর, সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে জরুরি বৈঠকে বসেন সিবিআইয়ের পদস্থ আধিকারিকরা। কীভাবে তদন্ত চালানো হবে এবং তদন্ত প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে, তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। বৈঠক থেকে তদন্তের জন্য বিশেষ টিমও তৈরি করা হয়। টিমে পুলিশ সুপার ও ডিআইজি পদমর্যাদার আধিকারিককে রাখা হয়েছে। আর পুরো তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়ে যাতে কোনও প্রশ্ন না ওঠে তার জন্য যুগ্ম অধিকর্তা পদমর্যাদার এক আধিকারিক টিমের মাথার উপরে থাকছেন। নিজেদের মধ্যে বৈঠকের পাশাপাশি বগটুইকাণ্ডে গঠিত রাজ্য সরকারের বিশেষ তদন্তকারী দলের (সিট) কাছ থেকে মামলার এফআইআর কপি সহ অন্যান্য নথিপত্রও চেয়ে নেন সিবিআই গোয়েন্দারা। তার প্রেক্ষিতে দায়ের করা হয় এফআইআর। নৃশংস ঘটনায় জড়িতরা যাতে সহজে জামিন না পান, তার জন্য বেশ কয়েকটি জামিন অয্যগ্য ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে।
যেহেতু কলকাতা হাইকোর্ট তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে রিপোর্ট পেশের জন্য সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন, তাই ওই তড়িঘড়ি এফআইআর দায়ের করার পাশাপাশি রাতেই রামপুরহাটের উদ্দেশে রওনা হয়ে যান আট আধিকারিক। রাতে রামপুরহাটে পৌঁছনোর পরে বিশ্রাম নিয়ে আজ শনিবার থেকেই তদন্তের প্রক্রিয়ায় নেমে পড়ছেন তাঁরা। ঘটনাস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহের দায়িত্বে থাকা কেন্দ্রীয় ফরেনসিক দলের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি গণহত্যার প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গেও কথা বলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। প্রয়োজনে ঘটনার পুনর্নির্মাণও করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা।