পুবের কলম, ওয়েবডেস্কঃ রামপুরহাটে চলা নারকীয় হত্যালীলার ঘটনায় দল, মত নির্বিশেষে দোষীদের গ্রেফতার করে কড়া শাস্তির নির্দেশ দিলেন ফিরহাদ হাকিম। ঘটনার পরে মঙ্গলবার ঘটনাস্থলে যান তিনি। সেখানে গিয়ে এই মৃতদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন। ফিরহাদ সাংবাদিকদের সামনে বলেন, মানুষ মারা গেছে, সেটা আগে পরে দল। যে বাচ্চাটি মারা গেছে সে কোনও দল করত না। সিপিএম, বিজেপি, তৃণমূল যারাই এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত থাকবে তারা শাস্তি পাবে। আমি ডিজি আসছেন। আমি ডিজিকে বলেছি, যেই যুক্ত থাকুক কাউকে ছাড়া হবে না। আইন সবার উপরে। যারা বাংলার মাথার নীচু করে, তাদের সবাইকে গ্রেফতার করুন।
ফিরহাদ হাকিম বলেন, আমাদের লোকই খুন হয়েছে। কী কারণে খুন হয়েছে, তা খুঁজে বের করতে হবে। খুনের পর অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। সরকারের নাম বদনাম করার জন্য এই চক্রান্ত।
সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে ফিরহাদ বলেন, কিভাবে আগুন লেগেছে তা আমি বলতে পারব না। ফরেনসিক রিপোর্ট বলবে। সিট-তদন্ত ভার নিয়েছে। সিট-এর তদন্তে আমাদের আস্থা আছে।
ফিরহাদ হাকিম আরও বলেন, আজ মৃত পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছি। জীবন তো ফিরিয়ে দিতে পারব না। ভাইয়ের মতো পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছি।
উল্লেখ্য, বীরভূমের রামপুরহাট-১ ব্লকের বড়শাল গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ছিলেন ভাদু শেখ। সোমবার রাতে রামপুরহাটে জাতীয় সড়কের পাশ থেকে উপপ্রধান ভাদু শেখকে বোমা ছুঁড়ে দুষ্কৃতীরা খুন করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরপরই দুষ্কৃতীরা তাণ্ডব চালায়। বেশ কিছু বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। স্থানীয় সূত্রে খবর, গতকাল তৃণমূলের উপপ্রধান ভাদু শেখের খুনের বদলা নিতে ১২ জনকে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও ৩৭ জন। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। ৪০টি বাড়ি আগুনে সম্পূর্ণ ভস্মীভূত।
রামপুরহাট কাণ্ডে দমকলের দাবি ১০ জনের অগ্নিদগ্ধ দেহ উদ্ধার হয়েছে। সোমবার রাতেই তিনটি দেহ উদ্ধার হয়েছে, আজ মঙ্গলবার বাকি দেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
তৃণমূল উপপ্রধান ভাদু শেখের খুনের ঘটনায় আজ সাংবাদিক বৈঠক করেন রাজ্য পুলিশের ডিজি মনোজ মালব্য। মঙ্গলবার রাজ্য পুলিশের ডিজি বলেন, রামপুরহাটের ঘটনায় তিন সদস্যের সিট গঠন করা হয়েছে। যার নেতৃত্বে রয়েছেন জ্ঞানবং সিং। এই ঘটনায় ৮ জনের মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। সম্ভবত সঞ্জু শেখের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। একই পরিবারের সাত জনের মৃত্যু হয়েছে। পরে একজনের মৃত্যু হয়েছে। খুনের এক ঘন্টার মধ্যেই বাড়িতে আগুন লাগানোর অভিযোগ ওঠে। ঘটনায় ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই ঘটনার পিছনে কোনও রাজনৈতিক কারণ না অন্য উদ্দেশে খুন তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এসডিপিও রামপুরহাটকে সরানো হয়েছে।
ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ১০ জনের পুড়ে মৃত্যুর খবর গিয়েছে। তবে আরও তিন জন হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে, আশঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে।