দেবশ্রী মজুমদার, শান্তিনিকেতন: বাংলাদেশ ভবনে সোমবার রাতভর আটকে পড়েন বিশ্বভারতীর রেজিস্ট্রার আশিস আগরওয়াল, জয়েন্ট রেজিস্ট্রার অফ এগজাম দেবাশীষ চক্রবর্তী, পাবলিক রিলেশন অফিসার অতিগ ঘোষ, প্রক্টোর সুদেব প্রতিম বসু সহ অন্যান্য আধিকারিকরা। ঘেরাও মুক্ত করতে গভীর রাতে ক্যাম্পাসে হাজির হয় পুলিশ। কিন্তু সুরাহা মেলেনি। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত অনশন চলছে এবং রেজিস্ট্রার সহ অন্যান্য আধিকারিকরা বাংলাদেশ ভবনেই আছেন।
ঘটনার জেরে মঙ্গলবার সকালে কর্মসচিবের পদ থেকে ইস্তফা দেন তিনি। যদিও তাঁর ইস্তফাপত্র এখনও পর্যন্ত গৃহীত হয়ছে কিনা জানা নেই। অনশনরত পড়ুয়া সোমনাথ সৌ জানান তারা কাউকে আটকে রাখেনি। কেউ যদি জিদ ধরে গাড়িতে বসে থাকেন সেক্ষেত্রে আমাদের কিছু করার নেই। পুলিশ তো সবার সামনে তাঁদের নিয়ে যেতে চাইলেন।
জানা গেছে, সোমবার বাংলাদেশ ভবনে একটি বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। পড়ুয়ারা জানতে পেরে সেখানে জমায়েত করে। রেজিস্ট্রার আশিস আগরওয়াল সংবাদমাধ্যমকে জানান, বৈঠকে ঢুকতে প্রথমে বাধা দিলেও পরে পড়ুয়ারা তাঁকে ঢুকতে দেয়। কিন্তু অনেকেই আসতে পারেননি। তার ফলে বৈঠক বাতিল করা হয়। এরপর আমরা বেরোতে পারিনি। কারণ পড়ুয়ারা রাস্তায় শুয়ে পড়েন। গভীর রাতে শান্তিনিকেতন থানার ওসি দেবাশীষ পণ্ডিত ঘটনাস্থলে হাজির হন। তিনি আটকে পড়া আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলে, জানান যে ওনাদের আসতে বলা হলেও ওনারা আসতে চাননি।
ছাত্র সোমনাথ সৌ বলেন, কর্মসচিব গাড়িতে বসে রয়েছেন। পুলিশের মতো আমাদের টপকে যেতে পারতেন। উনি গাড়িতে বসে আছেন।
বিশ্বভারতীর টি এম সি পি ইউনিটের সভাপতি মীনাক্ষী ভট্টাচার্য বলেন, ওনাদের আটকানো হয়নি। আমাদের ছেলেরা রাস্তায় শুয়ে আছে। পুলিশের মতো টপকে তাঁরা যেতে পারতেন। কিন্তু আমাদের তিন দফা দাবি না মানলে আজকে অনশনরত পড়ুয়ারা আত্মহত্যা করলে তার দায় নিতে হবে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ তথা উপাচার্যকে। পরীক্ষা না দিলে ফেল করিয়ে দেওয়া হবে এমন হুমকি পরীক্ষা নিয়ামক দফতর তরফে দেওয়া হয়েছিল। যদিও সেই হুমকি সূচক নোটিশ ইতিমধ্যে তুলে নিয়েছি বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। যদিও বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েব সাইটে এখনও পর্যন্ত আপলোড করা হয়নি।
অন্যদিকে কলকাতা উচ্চ আদালতে পড়ুয়াদের পক্ষে বিশ্বভারতীর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননা রক্ষা মামলা দায়ের হয়েছে। যদিও আদালত জানিয়েছে আদালত বিশ্ববিদ্যালয় চালাতে পারে না।
উল্লেখ্যক বিশ্বভারতীর অলিন্দে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে রেজিস্ট্রার নিজেই উপাচার্যর সব সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারছেন না, তাই ইস্তফা দিয়েছেন তাঁর পদ থেকে। অতীতে একইভাবে প্রক্টোর শঙ্কর মজুমদার সমীরণ মণ্ডলরা একই পথে হাঁটেন।