সূরজ মিশ্র, পূর্ব মেদিনীপুর: এবার নন্দীগ্রামেই বিক্ষোভের মুখে পড়লেন এলাকার বিধায়ক তথা রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ১৪ মার্চ তৃণমূলের শহিদ দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসে বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয় তাঁকে। শুভেন্দুকে কালো পতাকা দেখায় স্থানীয় বাসিন্দার। এমনকী আওয়াজ ওঠে ‘গো ব্যাক’ শুভেন্দু অধিকারী। রাজ্য পুলিশ দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আনলে পরিস্থিতি অন্য হতে পারত বলে ধারণা এলাকাবাসীদের। কার্যত ‘নন্দীগ্রাম দিবস’ পালন নিয়ে তালপাটি খাল সংলগ্ন এলাকায় সোমবার সকাল থেকে উত্তেজনা চরমে ছিল।
২০০৭ সালের ৩ জানুয়ারি হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের নোটিশের বিরুদ্ধে কালীচরণপুর পঞ্চায়েত ঘেরাও করেন বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা। আন্দোলন ছত্রভঙ্গ করতে রণং দেহি মূর্তি নেয় পুলিশ। সেদিন পুলিশের গুলিতে প্রাণ গিয়েছিল ১৪ জনের। তারপর থেকেই প্রতি বছর ১৪ মার্চ শহিদ দিবস পালন করে তৃণমূল। এবার বিজেপিও দিনটি পালন করছে।
এদিন শহিদ দিবসের অনুষ্ঠানে এসে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে তীব্র আক্রমণ করেন তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ। অন্যান্যদের মধ্যে ছিলেন, রাজ্যসভার সাংসদ দোলা সেন, রাজ্য নেতৃত্ব সঞ্জয় বক্সী, ডঃ অলোক দাস প্রমুখ। কুণাল ঘোষ বলেন, বাংলার মাটিতে বিজেপি যেখানে যতটুকু আছে উৎখাত করব। বিজেপি থাকবে না।’ এরপর শুভেন্দু অধিকারীকে বিলুপ্ত পশু ডায়নোসরের সঙ্গে তুলনা করে তিনি বলেন, শুভেন্দু অধিকারীকে শুধুই ছবিতে পাওয়া যাবে। নারদা-সারদা মামলায় নাম রয়েছে শুভেন্দুর। তাই সিবিআই-ইডির হাত থেকে বাঁচতে বিজেপির জুতো পালিশ করছে। খোল-করতাল বাজিয়ে হঠাৎ হিন্দু সেজেছে।’
শুভেন্দুর নন্দীগ্রামে জয় প্রসঙ্গে কুণাল ঘোষ বলেন, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও জয়প্রকাশ মজুমদার যা বলেছেন পুরোদস্তুর তদন্ত হওয়া উচিত। আশাকরি আদালতে যথাযথ সময়ে তারা শুভেন্দুর মুখোশ খুলে দেবেন। তারা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী হিসেবে বিবেচিত হবেন। মামলা এগোক, সাক্ষী হিসেবে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও জয়প্রকাশ মজুমদার আদালতের সামনে যা বলার বলবে।’
উল্লেখ্য, ২০০৭ নন্দীগ্রামে জমি অধিগ্রহণের প্রতিবাদে কৃষকদের উপর পুলিশ এবং সিপিআই (এম) সমর্থকদের গুলিতে ১৪ জন কৃষক নিহত হয়েছিলেন। নিহত সেই কৃষক পরিবারের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে রাজ্য সরকার এই দিনটিকে কৃষকদের উৎসর্গ করে ‘কৃষক দিবস হিসাবে ঘোষণা করে।