আসিফ রেজা আনসারী : বাবা শিক্ষিত বেকার জোটেনি চাকরি। কোনওরকমে কৃষিকাজ করেই সংসার চালান। এমনই ঘর থেকেই উঠে আসা মোধাবী পড়ুয়া মিসবাহুল ইসলাম। অতিসাধারণ পরিবারের ছেলেটিই দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় এর স্নাতক পরীক্ষায় পেল স্বর্ণপদক বা গোল্ড মেডেল। যা নিয়ে উচ্ছ্বসিত পরিবার ও স্থানীয়রা। এরই মধ্যে টাকার অভাব ভাবাচ্ছে মিসবাহুলকে। আগামী দিনে ঠিকঠাক পড়াশোনা হবে তো? বারবার এই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে মিসবাহুলের মাথায়। তাঁকে সাহায্য করতে কেউ এগিয়ে আসুন এমনটাই চান মেধাবী পড়ুয়া ।
প্রসঙ্গত মিসবাহুল ইসলাম এর বাড়ি মালদা জেলার রতুয়া থানার অন্তর্গত ভাদোর শিমুলতলা গ্রামে। আব্বা ইলিয়াস রাজী সামান্য চাষি। চাষ-আবাদ করেই সংসার সামলানোর চেষ্টা করেন। সেই পরিবারের রয়েছে সাতজন সদস্য। সবাই পড়াশোনা করে। খরচ সামলাতে তাই হিমসিম খেতে হয় ইলিয়াস সাহেবকে।
মিসবাহুল জানান তিনি গ্রামের স্কুলে প্রাথমিক শিক্ষা অর্জনের পর প্রায় ন’বছর মাদ্রাসায় পড়াশোনা করেন। তারপর জালালপুর হজরতপুর সিনিয়র মাদ্রাসা থেকে মাধ্যমিক ও ২০১৭ সালে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেন। তিনি মাদ্রাসা বোর্ডে রাজ্যের প্রথম ১০০ জনের মধ্যে ছিলেন। তারপর ২০১৭ সালে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন জাকির হোসেন দিল্লি কলেজে আরবি অনার্সে ভর্তি হন। সব সেমিস্টারের সর্বাধিক নম্বরে পাশ করেন তিনি। ২০২১ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সর্বোচ্চ নম্বর নিয়ে পাশ করে গোল্ড মেডেল পেয়েছেন। গত ২৬ তারিখ সমাবর্তন অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের উপস্থিতিতে ডিগ্রি ও সম্মান তুলে দেওয়া হয় মিসবার হাতে।
মিসবাহুল ইসলাম বর্তমানে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছেন। এবারই স্নাতকোত্তর কোর্সে ভর্তি হয়েছেন। তাঁর স্বপ্ন অধ্যাপনা করা ও আরবি ভাষা নিয়ে গবেষণা করা। তিনি বলেন দেশ-বিদেশের আরবি বই পড়া ও গবেষণা কাজের সঙ্গে পরিচিত হতে চাই। বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও প্রজেক্ট দেয় আর সেই কাজের জন্য খরচ করার মতো টাকা তার নেই। কেউ পাশে দাঁড়ালে ভালো হয়।