পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: নাগরিক অধিকার প্রয়োগ করতে হলে হিজাব খুলে বুথে ঢুকতে হবে। এমনই হুমকি দিলেন বিজেপির এক এজেন্ট। এমনিতেই কর্নাটকের স্কুল-কলেজে হিজাব বন্ধের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে আন্দোলন শুরু হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ওই পদ্ম-এজেন্টের এই ধরনের হুমকি নতুন করে বিতর্ক তৈরি করেছে। যা নিয়ে বিরোধীদের তোপ– বিজেপির মুখোশ খুলে গিয়েছে। ওরা যে একটি সম্প্রদায়ের নাগরিক অধিকার কেড়ে নিতে চায় এই ঘটনা থেকে তা স্পষ্ট।
শনিবার ছিল তামিলনাড়ুতে ১২– ৬০৭টি পুরসদস্য ও ৬৪৮টি পুর বোর্ডে নির্বাচন ছিল। সেইমতো
তামিলনাড়ুর অন্যান্য জায়গার মতো মেলুতে আল্ আমিন নামে একটি স্কুলে চলছিল ভোটগ্রহণ। সেখানে হিজাব পরে ভোট দিতে আসেন এক মুসলিম মহিলা ভোটার। তাঁকে দেখেই রে-রে করে তেড়ে যান সেখানে নিযুক্ত বিজেপির এক এজেন্ট। ভোটারকে উদ্দেশ্য করে অত্যন্ত রুঢ় ভাষায় বলেন– ‘হিজাব পরে এসেছেন কেন? ভোট দিতে দেওয়া হবে না। হিজাব পরে আসলে নাগরিক অধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন না। ভোট দিতে হলে হিজাব খুলে ফেলতে হবে।’ ওই হিজাবধারী মহিলাও নাছোড়বান্দা। তিনিও সাফ জানিয়ে দেন– কোনও অবস্থাতেই হিজাব খুলবেন না– হিজাব পরেই ভোট দেবেন।
এই মহিলার পালটা প্রশ্ন– সংবিধানের কোথায় লেখা রয়েছে ধর্মীয় পোশাক পরে ভোট বা নাগরিক অধিকার প্রয়োগ করা যাবে না? জানা গিয়েছে ওই পদ্ম এজেন্টের নাম গিরিরাজন। গিরিরাজনের সঙ্গে মহিলার তর্কাতর্কি বাড়তেই সেখানে চলে আসেন অন্যান্য দলের এজেন্টরাও। তাঁরা অবশ্য এই মহিলা ভোটারের পাশে দাঁড়ান। হিজাব পরিহিতা ভোটারকে সমর্থন করে বলেন– এভাবে কাউকে ভোটদান থেকে বিরত করা যায় না। এটা অন্যায়।
এরপরই তাঁরা বুথের দায়িত্বে থাকা আধিকারিকের কাছে ওই পদ্ম এজেন্টকে সেখান থেকে সরিয়ে দেওয়ার দাবি জানাতে থাকেন। এদিকে এই খবর পৌঁছে যায় পুলিশের কাছেও। ঘটনাস্থলে চলে আসে বিরাট পুলিশ বাহিনী। পুলিশি হস্তক্ষেপে ঢোক গেলেন ওই পদ্ম এজেন্ট। হিজাব পরেই ভোট দেন ওই মহিলা। পরে ওই মহিলা সাংবাদিকদের জানান– দীর্ঘদিন ধরে তিনি হিজাব পরিধান করে আসছেন। কোথাও কোনও সমস্যা হয়নি। এই প্রথম এমন আচরণের মুখোমুখি হলেন। একইসঙ্গে তিনি এও জানিয়ে দিয়েছেন– কোনও অবস্থাতেই হিজাব ছাড়বেন না। ইসলামি অনুশাসন মেনে বড় হয়েছেন। আল্লাহর নির্দেশ মেনেই চলবেন।