পুবের কলম, ওয়েবডেস্কঃ চার পুরনিগমের ভোটে আজ তৃণমূলের জয়-জয়কার। আর আজই তিনদিনের সফরে উত্তরবঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শিলিগুড়ি পৌঁছেই মুখ্যমন্ত্রী সকলকে শুভেচ্ছা জানিয়ে আরও একবার বলেন, ‘এই জয়ের জন্য মানুষের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। যত জিতব, ততই নম্র হব। আমি মা-মাটি-মানুষের কাছে কৃতজ্ঞ থাকব’।
মুখ্যমন্ত্রী এদিন নৌকাঘাট মোড় থেকে বলেন, শিলিগুড়িতে অনেক উন্নতি হয়েছে। নতুন ফ্লাইওভার করেছি। মালদার অনেক উন্নতি হয়েছে। গাজলডোবায় তৈরি হয়েছে ‘ভোরের আলো’। শিলিগুড়ি অনেক গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। আমরা ক্ষমতায় আসার পর অনেক উন্নয়ন হয়েছে। শিলিগুড়ি গেটওয়ে নির্মাণ, উড়ালপুর তৈরি হয়েছে। খুব সহজেই এখান দিয়ে নেপাল, ভুটান যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।”
শিলিগুড়ি ছাড়াও তাঁর নেতৃ্ত্বে তৃণমূল সরকার গত দশ বছরে উত্তরবঙ্গে যে ঢালাও উন্নয়ন করেছে, তারও খতিয়ান এদিন তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সরকার চায় শিলিগুড়িতে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর তৈরি হোক। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে উড়ান উত্তরবঙ্গের একাধিক জায়গায় ওঠানামা করুক। এ কারণেই কোচবিহার, মালদা, বালুরঘাটে বন্দর নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। বাংলায় ২৬টি হেলিপ্যাড তৈরি হয়েছে।
সকলকে ফের একবার অভিনন্দন জানিয়ে মমতা বলেন, শিলিগুড়িতে আমাদের জয় এসেছে। এই জয় মা-মাটি-মানুষের জয়। গৌতম দেবকে মেয়র করা হবে বলে ঘোষণা করেছি। তবে এখনও অনেক ফরম্যালিটিস আছে। আপনারাও গৌতম দেবকে আশীর্বাদ করেছেন। আমি বলেই দিয়েছি, সব জাত-ধর্ম নির্বিশেষে মানুষের জন্য কাজ করতে হবে। আমি শিলিগুড়ির রাস্তা ঝকঝকে দেখতে চাই। যাতে রাস্তায় মানুষকে দাঁড়িয়ে থাকতে না হয়। রাস্তার কাজ শেষ হলেই কলকাতা থেকে ৬ ঘন্টায় শিলিগুড়ি পৌঁছনো সম্ভব হবে। মুখ্যমন্ত্রী সকলকেই কাজের প্রতি মনোযোগী হওয়ার নির্দেশ দিয়ে বলেন, শুধু টাকা ঢাললেই চলবে না, একটা ভিশন থাকতে হবে। একটা ট্রাফিক প্ল্যান তৈরি করতে হবে। যাতে মানুষের কোনও অসুবিধে না হয়। শিলিগুড়ি-সহ উত্তরবঙ্গে নানা জাতি-উপজাতি, নানা ভাষার মানুষের বসবাস। প্রত্যেক শ্রেণির মানুষের জন্য গুরুত্ব দিয়ে উন্নয়ন করা হয়েছে। রাজবংশীদের জন্য ২০০টি স্কুল হয়েছে। কামতাপুরীদের জন্যও স্কুল হয়েছে। উত্তরবঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে একাধিক নতুন রাস্তা হয়েছে। বিভিন্ন সড়কের মানোন্নয়ন করা হয়েছে। যে কারণে আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার কিংবা বালুরঘাট থেকে সহজেই শিলিগুড়িতে পৌঁছনো যায়। তবে ভোটে জিতে শুধু আবির খেললেই চলবে না। মনটাকেও সবুজ করে তুলতে হবে। তবেই উন্নয়নের জোয়ার আসবে।
প্রসঙ্গত, পুরভোট ঘোষণার পর এই প্রথম তিনদিনের সফরে উত্তরবঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবারের উত্তরবঙ্গ সফরে কোচবিহারে গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশনের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন মুখ্যমন্ত্রী। মূলত গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশনের নেতা অনন্ত মহারাজের অনুরোধেই সেখানে যাচ্ছেন তিনি। আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশনের অনন্ত মহারাজ গোষ্ঠীর ২৪ তম কেন্দ্রীয় অধিবেশন শুরু। সেইসঙ্গে এবছর চিলা রায়ের ৫১২ তম জন্মজয়ন্তী পালন করা হচ্ছে। তার জন্য ১৬ ফেব্রুয়ারি সংগঠনের পক্ষ থেকে বড়সড় অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ওই অনুষ্ঠানের জন্য কোচবিহার ২ নম্বর ব্লকের বানেশ্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত সিদ্ধেশ্বরী এলাকায় জমি চিহ্নিত করা হয়েছে। সেই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন গ্রেটার কোচবিহারের নেতা অনন্ত মহারাজ। ১৬ তারিখ বাণেশ্বরের সিদ্ধেশ্বরী এলাকায় চিলা রায়ের জন্মজয়ন্তী অনুষ্ঠানে তিনি যোগ দেবেন বলে খবর। বুধবার কলকাতায় ফিরে আসবেন মুখ্যমন্ত্রী।