ফারুক আলমঃ কয়েকটি বিক্ষিপ্ত ঘটনা ছাড়াই শান্তিপূর্ণ ও নির্বিঘ্নে ভোট মিটল বিধাননগরে। রাজারহাট এবং সল্টলেক অংশ মিলিয়ে শনিবার সকাল ৬ টার সময় থেকে বিধাননগরের ৪১ টি ওয়ার্ডের ভোট গ্রহণপর্ব শুরু হয়। দিনের শেষ অর্থাৎ বিকাল ৫ টা নাগাদ বিধাননগরের ৭১.০৯ মানুষ গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় উৎসবে শামিল হন। গাঁতি ১ নম্বর ওয়ার্ড থেকে সল্টলেক দত্তাবাদের মানুষ একেবারে উৎসবের মেজাজে নিজেদের ভোট অধিকার প্রয়োগ করেন।
রাজ্য পুলিশের নিরাপত্তা বলয়ের ঘেরাটোপে প্রায় প্রতি বুথের মানুষ লাইনে দাঁড়িয়ে অবাধে ভোট দেন। ভোট পর্ব চলাকালীন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রাক্তন মেয়র সব্যসাচীকে ফোন করে ভোট পরিস্থিতির খবর নেন।
প্রথম থেকেই বিধাননগরের উত্তেজনাপ্রবণ ওয়ার্ড হিসাবে চিহ্নিত হয়েছিল রাজারহাটের ১২,১৩ ও১৪ নম্বর ওয়ার্ড। খানিকটা হলেও সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড গুলিতে উত্তেজনার সেই ছবি ধরা পড়ল।
শনিবার বিধাননগর ভোটে উত্তেজনার কিছু চিত্র হল এদিন প্রথমে সকাল ৬ টা নাগাদ পুরনিগমের ১২ নম্বর ওয়ার্ড আটঘরা প্রাইমারি স্কুলেরû বুথে নির্দলের মমতা মন্ডলের সঙ্গে সিপিএমের রিঙ্কু রহমানের কর্মীদের মধ্যে অশান্তির খবর আসে। নির্দলের অভিযোগ, সিপিএমের কর্মীরা ভোট কেন্দ্রের মূল প্রবেশদ্বারে জটোলা পাকিয়ে রাখে। সেই নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে বাগবিতণ্ডা শুরু হয়।
যদিও পুলিশের তৎপরতায় শেষ পর্যন্ত শান্তিতে মেটে ভোট। সকাল ১১ টা। ভোট কেন্দ্রের অবৈধ জমায়েত নিয়ে জ্যাংড়া ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূল ও কংগ্রেস কর্মীদের মধ্যে অশান্তি। খবর পেয়ে নিউ টাউন জোনের ডিসি বিশপ সরকার-সহ বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। সকাল ১১.৪৫ মিনিট। বুথ জ্যামের অভিযোগে বাগুইআটি ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূলের জয়শ্রী বাগুই ও কংগ্রেসের কাকুলি বাগুইয়ের কর্মীরা বচসায় জড়ায়। দুপুর ১২.৪৫ মিনিট। ১৩ নম্বর ওয়ার্ড হাতিয়াড়া হাই মাদ্রাসা স্কুলে প্রবল উত্তেজনা ছড়ায়। বুথ দখলের অভিযোগে প্রথমে বাইরের অংশে তৃণমূল, নির্দল ও সিপিএমের কর্মীরা অশান্তিতে জড়িয়ে পড়ে।
সেই সঙ্গে দীর্ঘ সেই অশান্তির জেরে কিছুক্ষণ ভোটগ্রহণ পর্ব বন্ধ হয়ে যায়। সুযোগ বুঝে বুথের ভিতর ঢুকে পড়ে একদল দুষ্কৃতী। যদিও পরে পুলিশ গোটা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে এনে পুনরায় ভোট প্রক্রিয়া শুরু করে। এক্ষেত্রে বাম প্রার্থী সিপিআইএমের প্রাক্তন কাউন্সিলার মহসিন আহমেদ ও নির্দল প্রার্থী আধুল হান্নান গাজীর সমর্থকদের বিরুদ্ধে বুথ দখলের অভিযোগ আনে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী সিরাজুল হক।
যদিও সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে মহসিন জানান, নির্বিঘ্নে ভোট চলাকালীন আচমকাই তৃণমূল কর্মীরা তাদের এজেন্টদের মেরে উঠিয়ে দেন। ১, ২০, ৩১ নম্বর ওয়ার্ডেও ছড়ায় অশান্তি। অন্যদিকে, সল্টলেকের ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূল প্রার্থী মিনু দাসকে মারধরের অভিযোগ ওঠে বিজেপি প্রার্থী প্রতিমা সাহার বিরুদ্ধে।
আবার এইচএ ব্লকের একটি বুথে ইভিএম খারাপের খবরও মেলে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে গোলমালের অভিযোগে পদক্ষেপও নিয়েছে পুলিশ।
বিধাননগর কমিশনারেট সূত্রে খবর ভোট প্রভাবিত করার অভিযোগে সন্ধ্যা ৬.৪৫ মিনিট পর্যন্ত মোট ৪৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।