পুবের কলম ওয়েবডেস্ক : মঙ্গলবার প্রকাশিত এক রিপোর্টে ইসরাইলকে ‘বিভাজনসৃষ্টিকারী’ রাষ্ট্র বলেছে অ্যামনেস্টি। পাল্টা আক্রমণে ইসরাইলের বক্তব্য অ্যামনেস্টি ‘ইহুদিবিরোধী’ আগুন ছড়াচ্ছে।
মঙ্গলবার প্রায় ২৮০ পাতার একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। ওই রিপোর্টে অ্যামনেস্টির সঙ্গে কাজ করেছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এবং ইসরাইলের মানবাধিকার সংগঠন বিটিসেলেম। রিপোর্টে একাধিক বিষয়ের অবতারণা করে বলা হয়েছে, ইসরাইল যেভাবে রাষ্ট্র পরিচালনা করছে, তাকে ‘অ্যাপারথেইড’ বলা যায়। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে যে ‘ইসরায়েল সরকার ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে যে বর্ণবৈষম্যমূলক মানসিকতা দেখিয়েছে তা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ। এর জন্য তাকে অবশ্যই জবাবদিহি করতে হব।’
অ্যামনেস্টি বলেছে যে ইসরায়েল এমন আইন চালু করেছে যেগুলি ফিলিস্তিনিদের উপর একটি নিষ্ঠুর নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা বজায় রাখার উদ্দেশ্যে তৈরি। ফিলিস্তিনিদের ভৌগলিক এবং রাজনৈতিকভাবে খণ্ডিত করা হয়েছে। তাদের দরিদ্র করে রাখা হয়েছে। নিরাপত্তাহীন জীবন কাটাতে বাধ্য করা হয়েছে তাদের।
সমাজবিজ্ঞানে এই অ্যাপারথেইড শব্দটিকে বিভাজনসৃষ্টিকারী রাষ্ট্রের সংজ্ঞা হিসেবে ধরে নেওয়া হয়। যে রাষ্ট্র নিজের দেশের নাগরিকদের মধ্যে বিভেদ তৈরি করে। সুযোগ দেওয়ার ক্ষেত্রে বর্ণ-ধর্ম-জাতিসত্ত্বা ইত্যাদি বিষয়গুলিকে সামনে রাখে। অ্যাপারথেইডের ভাবানুবাদ হতে পারে বিভাজনসৃষ্টিকারী রাষ্ট্র।
অ্যামনেস্টির রিপোর্টে এই শব্দটি ব্যবহার করেই ইসরাইলকে আক্রমণ করা হয়েছে। ইতিহাস উল্লেখ করে, এবং ইতিহাসের ঘটনাবলি সাজিয়ে দেখানো হয়েছে, কীভাবে ইসরাইলে বসবাসকারী আরব এবং ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে বিমাতৃসুলভ আচরণ করেছে ইসরাইলের প্রশাসন। শুধু তা-ই নয়, গাজা এবং ওয়েস্ট ব্যাঙ্কের উল্লেখ করেও ইসরাইলকে একহাত নিয়েছে অ্যামনেস্টি।
ইসরাইলের বক্তব্য, অ্যামনেস্টির রিপোর্টে গোড়ায় গলদ আছে। তারা ইতিহাসের ভুল ব্যাখ্যা করেছে। ইসরাইলে ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে বিমাতৃসুলভ আচরণ করা হয়, এ কথাও মানতে চায়নি ইসরাইল। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, অ্যামনেস্টির রিপোর্ট এবং ইসরাইলের প্রতিক্রিয়া দুই ক্ষেত্রেই বেশকিছু কড়া শব্দের ব্যবহার আছে। যা পরিস্থিতি আরো জটিল করে দিয়েছে।