নয়াদিল্লি: কাশ্মীরের অর্থনীতির অন্যতম মানদণ্ড আপেল চাষ ব্যাপক ক্ষতির মুখে। কারণ ভারতের বাজারে অবৈধভাবে প্রবেশ করছে ইরানের আপেল।আর বাজারে ইরানি আপেল আসার কারণে এবার তিন কোটি বাক্স কাশ্মীরি আপেল বিক্রি হয়নি। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন আপেল চাষিরা। কাশ্মীরে ৭ লাখ পরিবার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বাগানের সঙ্গে যুক্ত। এটি কাশ্মীরের জিডিপির ৭ শতাংশ। উপত্যকায় ৩.৩৮ লাখ হেক্টর জমিতে ফল চাষ হয়। এর মধ্যে ১ লাখ ৬২ হাজার হেক্টর জমিতে আপেল চাষ হয়। গত বছর ফল চাষিদের ঝড় এবং প্রবল বাতাসের কারণে ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়েছিল। আর তার মধ্যেই এখন নতুন সমস্যা হয়ে উঠছে ইরান থেকে আসা আপেল। কাশ্মিরি ফল উৎপাদক ও বিক্রেতাদের সংগঠনের মতে, ইরানি আপেল ভারতের বাজারে চলে আসায় গত দু’মাসে কাশ্মিরি আপেলের দাম প্রায় অর্ধেক হয়ে গিয়েছে। ৪০০ কোটি টাকা ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইরানের আপেল সস্তা এবং খুব দ্রুত বাজারে আসছে, যার কারণে কাশ্মীরি আপেলের চাহিদা অনেক কমে গেছে। আপেল চাষী অনন্তনাগের নাসরুল্লাহ বলছেন, ভারতে ইরানি আপেল আসার কারণে তিন কোটি বাক্স কাশ্মীরি আপেল বিক্রি করা যাচ্ছে না। অবিলম্বে পদক্ষেপ না নিলে আপেল চাষি ও এর ব্যবসায়ীদের ৪০০ কোটি টাকার ক্ষতি হবে।
বারামুল্লার কৃষক মুকিত আহমেদ বলেছেন যে গত বছর কাশ্মীরের উচ্চমানের আপেলের একটি বাক্স বিক্রি হয়েছিল ১২০০ টাকায়। এবার চাহিদা কমে যাওয়ায় তাদের বিক্রি করতে হচ্ছে ৬০০ টাকায়। দেশে কাশ্মীরি আপেলের চাহিদা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। অনন্তনাগের তাজমুল আহমেদ বলেন, আপেল চাষ করে তিনি বছরে ৮ লাখ আয় করতেন এবং এ বছর ইরানি আপেলের কারণে চাহিদা কমে গেছে। আয় হয়েছে মাত্র দেড় লাখ টাকা।
শীর্ষ সংস্থার এক আধিকারিক বলেন, “আমাদের দেশে ইরানী আপেলের এই অবৈধ এবং বেআইনি ডাম্পিং শুধুমাত্র জম্মু-কাশ্মীর এবং হিমাচল প্রদেশের ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষিদের জন্যই বিপর্যয়ই নয়, এর ফলে রাষ্ট্রীয় কোষাগারেরও ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। জম্মু ও কাশ্মীর এবং হিমাচল প্রদেশ- এর উদ্যান শিল্পকে বাঁচানোর জন্য আমরা আমাদের দেশে আফগানিস্তান/দুবাই হয়ে ইরানি আপেলের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করেছি।” এছাড়াও
এদেশে ইরানি আপেল আসার ওপর শতভাগ আমদানি শুল্ক আরোপের দাবি জানিয়েছেন ফল চাষিরা। এপ্রসঙ্গে ইউনিয়নের সভাপতি, আহমেদ বশীর বলেছেন, “আমরা প্রধানমন্ত্রী মোদিকে হস্তক্ষেপ করার জন্য এবং কাশ্মীরের ফল শিল্পকে বাঁচানোর আহ্বান জানিয়েছি যা ধ্বংসের পথে।”