পুবের কলম ওয়েবডেস্কঃ অসমে সন্দেহভাজন অপরাধীদের বিরুদ্ধে পুলিশের নির্বিচারে এনকাউন্টারের ঘটনা যখন ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে– সেই সময় এই প্রবণতার বিপরীত মেরুতে দাঁড়াল জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। দু’দিনের গণ শুনানি শেষ করেছেন কমিশনের সদস্যরা। গুয়াহাটিতে শনিবার গণ মাধ্যমের কাছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান অরুণ কুমার মিশ্র বলেন– ভুয়ো এনকাউন্টার কোনও ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এসব ঘটনা বর্বরোচিত। ঘটনাস্থলেই বিচার এদেশে চলতে পারে না। আইনকে তার নিজের পথ ধরে চলতে দেওয়া উচিত। যে কোনও অপরাধীরই বিচার হওয়া উচিত আইনের গণ্ডির মধ্যে। এরপর আইন অনুযায়ী অপরাধীর শাস্তিই কাম্য।
অন্যদিকে– নাগাল্যাণ্ডের মন জেলার ওটিং গ্রামে সেনাবাহিনীর হাতে ১৪ জন নিরীহ গ্রামবাসীর হত্যার ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা দায়ের করেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। কমিশনের চেয়ারম্যান অরুণ কুমার মিশ্র বলেছেন সংবাদ পত্রে প্রকাশিত রিপোর্টের ভিত্তিতে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। নাগাল্যান্ড সরকার গঠিত এসআইটি-র রিপোর্টও তাঁরা চেয়েছেন বলে মিশ্র জানান। স্বরাষ্টÉমন্ত্রকের কাছেও ঘটনার বিস্তারিত জানতে চাওয়া হয়েছে। অরুণ কুমার মিশ্র বলেছেন– এই ঘটনা যেহেতু বিচারাধীন তাই এখনই এ বিষয়ে আর কিছু বলা ঠিক হবে না। একই সঙ্গে তিনি জানান– পরিস্থিতি বিচার করে সেনাবাহিনীর জন্য বিশেষ অধিকার আইন আফস্পা প্রত্যাহারের বিষয়টি বিবেচনার জন্য সরকারকে পরামর্শ দিয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। মিশ্রের কথায়– বিশেষ কিছু জেলায় যদি পরিস্থিতি উন্মত্ত হয়– তাহলে সেইসব জায়গায় আফস্পা বহাল রাখা উচিত কিনা তা বিবেচনা করে দেখতে পারে কেন্দ্র সরকার।
এসবের পাশাপাশি– অসমের দরং জেলার গরুখুঁটির মর্মান্তিক ঘটনার প্রসঙ্গও উঠে আসে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যানের মুখে। তাঁর বক্তব্য– গৌহাটি হাইকোর্টে শুনানির পর সিদ্ধান্ত নেবে মানবাধিকার কমিশন। যেহেতু– বিষয়টি নিয়ে জনস্বার্থ মামলা করা হয়েছে। মিশ্র জানান– গরুখুঁটি -সিপাহ ঝাড় এলাকার উচ্ছেদ হওয়া মানুষদের সঙ্গে তাঁরা কথা বলেছেন– তাঁদের পুনর্বাসনের বিষয়টি নিশ্চিত করতে চায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। তারা অপেক্ষা করছেন গৌহাটি হাইকোর্টের মামলার জন্য।
প্রসঙ্গত– গুয়াহাটিতে মানবাধিকার কমিশনর সদস্যরা উত্তর-পূর্বের মোট ৪০টি মামলার শুনানি গ্রহণ করেছেন। এরমধ্যে অসমের ২৩টি– মণিপুরের ১৩– অরুণাচলের ১ এবং নাগাল্যাণ্ডের ৩টি মামলা রয়েছে।