বাবরি রায় হয়েছিল ‘আস্থায়।’ সেই রায়ের কথা উল্লেখ করেই কতুব মিনার চত্বরে হিন্দু এবং জৈন দেবতার মূর্তি রক্ষার ছক কষেছিল হিন্দুত্ববাদীরা।আদালতকে সেই দিকে পরিচালিত করার জন্য মামলা সাজিয়েছিলেন তাদের আইনজীবী।কিন্তু মামলা শোনামাত্রই দিল্লি আদালত তা খারিজ করে দেয়।
বিচারপতি নেহা শর্মা বলেন, ”ভারতের সাংস্কৃতিক ইতিহাস খুবই সমৃদ্ধ। বিভিন্ন সময়ে পৃথক পৃথক সাম্রাজ্যের শাসন চলেছে এখানে। অতীতে যে অনেক ভুল, অন্যায় হয়েছে সে কথা কেউ অস্বীকার করছে না। কিন্তু অতীতের ভুলভ্রান্তির উপর ভিত্তি করে দেশের বর্তমান ও ভবিষ্যতের শান্তি তো নষ্ট করা যায় না।”
কয়েক দশক ধরে মামলা চলার পর সুপ্রিম কোর্টে বাবরি রায় হয়েছিল ‘আস্থায়’।যুক্তি ও প্রমাণবিহীন এই রায় স্বাভাবিক কারণেই হিন্দুত্ববাদীদের উৎসাহিত করেছে। তারপর থেকে তারা একের পর এক মুসলিম স্থাপত্য নিয়ে জলঘোলা করার চেষ্টা করছে। যে ছকে বাবরির ভিতরে রামলালার মূর্তি ঢোকানো হয়েছিল সেই কৌশলেই কুতুব মিনার চত্বরেও মূর্তি ঢুকানোর চেষ্টা হয়েছিল। যা দিল্লি আদালত খারিজ করে দেয়। কাশী-মথুরার মসজিদ নিয়ে আদালতে মামলা তো চলছেই। এখন তাদের নজরে দিল্লির সিগনেচার ইসলামিক স্থাপত্য কুতুব মিনারের উপর।
কুতুব মিনার ইউনেস্কোর ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট’-এর অন্তর্গত। ইঁটের তৈরি মিনারের মধ্যে এটিই বিশ্বের দীর্ঘতম মিনার। দৈর্ঘ্য ৭২.৫ মিটার। এখানে রয়েছে ৩৭৯টি ঘোরানো সিঁড়ি।
আবেদনকারী হিন্দুত্ববাদীদের দাবি, এখানে মোট ২৭টি মন্দির ছিল। তার মধ্যে অন্যতম জৈন তীর্থঙ্কর ভগবান ঋষভ দেবের উপাসনাস্থল-সহ ভগবান বিষ্ণু, গণেশ, শিব, সূর্য, হনুমান, দেবী গৌরীর মন্দির। মামলায় হিন্দুপক্ষ বলেছে দিল্লি ১১৯২ সাল পর্যন্ত হিন্দু রাজাদের শাসনে ছিল।মুহাম্মদ ঘুরি ১১৯২ এ তরাইনের দ্বিতীয় যুদ্ধে পৃথ্বীরাজ চৌহানকে পরাজিত করেছিলেন।
মহম্মদ ঘুড়ির সেনাপতি কুতুবদিন আইবক শ্রী বিষ্ণু হরি মন্দির এবং ২৭টি জৈন ও হিন্দু মন্দির ধ্বংস করেছিলেন। সেই মন্দির চত্বরের ভিতরে হয়েছিল আলাদা নির্মাণ । মন্দির কমপ্লেক্সের নাম পরিবর্তন করে ‘কুওয়াত উল ইসলাম মসজিদ’ রাখা হয়, আরবি ভাষায় যার অর্থ ‘ইসলামের শক্তি’।