পুবের কলম প্রতিবেদকঃ চলতি বছরের জুন মাস পর্যন্ত অতিমারি পর্বে ভারতে কোভিডে মৃত্যুর সংখ্যা ২৭.৪৯ লক্ষের কাছাকাছি। সিভিল রেজিস্ট্রি সার্ভিস (সিআরসি) ও অন্যান্য সূত্র থেকে উঠে এসেছে এই পরিসংখ্যান। টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর গ্লোবাল হেলথ রিসার্চের অধিকর্তা ইন্দো-কানাডীয় মহামারিবিদ ড. প্রভাত ঝা বলেন– বিভিন্ন তথ্য থেকে দেখা যাচ্ছে যে– ২০২০ ও ২০২১ সালে অতিমারিকালে অতিরিক্ত মৃত্যুর মূল কারণই হল কোভিড-১৯। মৃতের প্রকৃত সংখ্যাটা অন্তত ৩০ লাখেরও বেশি। সরকারি রিপোর্টে যে সংখ্যাটা দেওয়া হয়েছে তার চেয়ে বেশি তো বটেই। প্রতি মিলিয়নে ভারতে কোভিডে মৃত্যুর হার লাতিন আমেরিকারই মতো। এমনটাই জানালেন ড. ঝা।
ইন্ডিয়ান অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্সে বিশেষ প্যানেলে ডা. ঝা ও অন্যান্য বিশেষজ্ঞ জানান– মৃতের হিসাব করা হয়েছে বহুবিধ সূত্র থেকে তথ্য নিয়ে যেমন রাজ্যগুলির সিআরএস ডেটা– কনজিউমার পেমেন্ট হাউসহোল্ড সমীক্ষার (সিপিএইচএস) তথ্য– পোলিং সংস্থা সিভোটারের সমীক্ষার তথ্য।
২০২০ সালের মে মাস থেকে সি ভোটার বাড়ি বাড়ি গিয়ে জানতে চায় যে– কোভিডের কারণে মৃত্যু হয়ে থাকলে তা নথিভুক্ত করা হয়েছে কি না। ড. ঝা বলেন– অতিমারির প্রথম ঢেউয়ে মানুষ কোভিডে মৃত্যু রিপোর্ট করেছে ১ শতাংশ বেশি।
এপ্রিল থেকে জুন মাসে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৬ শতাংশ। ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়াটসন ইন্সটিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড পাবলিক অ্যাফেয়ার্সের সিনিয়র ফেলো ড. অরবিন্দ সুব্রহ্মনিয়ামের মতে– এই হারটি গড়ে ৭ থেকে ১০ শতাংশ ছিল।
চেন্নাইয়ের এক স্বতন্ত্র তথ্য বিশ্লেষক রুক্মিনী এস বলেন– কোভিড-১৯ মৃত্যুর সংখ্যা যথাযথভাবে নথিভুক্ত হয়নি। কোভিড-১৯ মৃত্যু বিষয়ে ভারত সরকারের যে সংজ্ঞা দিয়েছে তা হল– কোভিড ধরা পড়ার পর এই রোগের তীব্রতা বৃদ্ধি পেয়ে যদি কয়েকদিন পরই মারা যায় কেউ– তাহলে সেটা কোভিড মৃত্যু হিসাবে গণ্য হবে।
মৃত্যুর পর ভারতে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মেডিক্যাল শংসাপত্র দেওয়া হয় এবং এটাই পরিস্থিতিকে জটিলতর করে তুলেছে। ড. ঝা বলেন– ভারতে প্রতি বছর প্রায় ১০ মিলিয়ন মানুষের মৃত্যু হয় যার মধ্যে ৩ মিলিয়নে মৃত্যুর তথ্য নথিভুক্ত করা হয় না।
মহিলাদের মৃত্যু আরও বেশি পরিমাণে নথিভুক্তির আওতা থেকে বাইরে থেকে যায়। ৬০ শতাংশ মহিলার মৃত্যু অনথিভুক্ত থেকে যায়। যে ৭ মিলিয়ন মৃত্যু নথিভুক্ত হয় তার আবার মাত্র প্রায় ১৩ শতাংশের মেডিক্যাল শংসাপত্র মেলে।